টানা তৃতীয় দিন দেশে সাড়ে তিন হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, এক দিনের মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছেছে তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩ হাজার ৫৮৭ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে আরও ৩৪ জনের। এর আগে এর চেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর এসেছিল গত বছরের ২০ ডিসেম্বর। সেদিন ৩৮ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা গত বছরের জুলাই মাসের পর মঙ্গলবার প্রথমবারের মত সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যায়। খবর বিডিনিউজের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সেদিন ৩ হাজার ৫৫৪ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর জানায়। এরপর আরও ৩ হাজার ৫৬৭ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানানো হয় বুধবার। গতবছরের ১৬ জুলাই মাসে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেদিন মোট ৩ হাজার ৭৩৩ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৩ হাজার ৫৮৭ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় এ পর্যন্ত দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৩৯৫ জনে। আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ৩৪ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট ৮ হাজার ৭৯৭ জনের মৃত্যু হল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৯৮৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ২৯ হাজার ৮৯৪ জন হয়েছে।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১২ কোটি ৪৮ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৭ লাখ ৪৪ হাজার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪১তম অবস্থানে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২২২টি ল্যাবে ২৭ হাজার ৪৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪৫ লাখ ১৪ হাজার ৭৩১টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২৬ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫১ শতাংশ। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৪ লাখ ৩৩ হাজার ১০৪টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১০ লাখ ৮১ হাজার ৬২৭টি। গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ আর নারী ৯ জন। তাদের ১ জন বাড়িতে বাকী সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ১৮ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর,১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর, ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছর এবং ১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ২৭ জন ঢাকা বিভাগের, ৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১ জন খুলনা বিভাগের, ১ জন বরিশাল বিভাগের, ১ জন রংপুর বিভাগের এবং ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।