করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত এক দিনে আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে আরও ৬১৯ জন। গতকাল শুক্রবার বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত ৬১৯ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৮৯০ জন হয়েছে। আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ১৫ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৭ হাজার ৯৮১ জনে দাঁড়িয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৪৮৭ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬১ জন হয়েছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ; তা সোয়া ৫ লাখ পেরিয়ে যায় গত ১৪ জানুয়ারি। এর মধ্যে গতবছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গতবছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ ডিসেম্বর তা সাড়ে সাত হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু। বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ৯ কোটি ৭৫ হাজার পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০ লাখ ৯২ হাজার।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩০তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৮তম অবস্থানে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৬টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৮টি জিন-এঙপার্ট ল্যাব ও ৫৬টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ সর্বমোট ২০০টি ল্যাবে ১৪ হাজার ৮৪৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৩৫ লাখ ৩০ হাজার ২৭৪টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ০৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮৭টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ১৮৭টি।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ আর নারী ৫ জন। তাদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৩ জন করে মোট ৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০, ৪১ থেকে ৫০ ও ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ৮ জন ঢাকা বিভাগের, ৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং ১ জন করে মোট ৩ জন রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৭ হাজার ৯৮১ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৪৭ জনই পুরুষ এবং ১ হাজার ৯৩৪ জন নারী। তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৪০১ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ২ হাজার ৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯১৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩৯৭ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৬২ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬০ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৬ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম। এর মধ্যে ৪ হাজার ৪৩৪ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৪৬৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৫৬ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৪৫ জন খুলনা বিভাগের, ২৪০ জন বরিশাল বিভাগের, ৩০১ জন সিলেট বিভাগের, ৩৫৫ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৮৭ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।