সংক্রমণের নিম্নমুখী ধারায় দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও প্রায় দেড় হাজার মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৫ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ৪০৬ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯ লাখ ৪১ হাজার ৫৭ জন। তাদের মধ্যে ২৯ হাজার ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
আগের দিন বৃহস্পতিবার ১ হাজার ৫১৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, ১০ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই হিসেবে গত এক দিনে আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটোই কমেছে। দৈনিক নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত রোগীর হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ, যা আগের দিন ৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ ছিল। সরকারি হিসাবে এই সময়ে সেরে উঠেছেন ৬ হাজার ৯৩৬ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত ১৭ লাখ ৯৩ হাজার ৮২ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন। সে হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ১৮ হাজার ৯৫০ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। তবে উপসর্গবিহীন রোগীরা এই হিসাবে আসেনি।
বাংলাদেশে মহামারীর শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপট পেরিয়ে এসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুইশর ঘরে নেমে এসেছিল গত বছরের শেষ দিকে। এরপর আসে আরেক নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন, নতুন বছরের শুরু থেকে দ্রুত বাড়তে থাকে সংক্রমণ। এক পর্যায়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে, ৪ ফেব্রুয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে আসে ১০ হাজারের নিচে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তা পাঁচ হাজারের নিচে নামে। মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৯৯৪ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৭০ শতাংশের বেশি। যে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ এবং ছয়জন নারী। তাদের মধ্যে একজন ঢাকা বিভাগের বিভাগের এবং চারজন চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। এছাড়া রাজশাহী বিভাগের একজন, খুলনা বিভাগের একজন, বরিশাল বিভাগের দুইজন এবং দুইজন সিলেট বিভাগের বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। তাদের মধ্যে ৭ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, একজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, একজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর, একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছর এবং একজনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৫ আগস্ট ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৯ লাখ ২৯ হাজারেরও বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪৩ কোটি ১৬ লাখের বেশি।