ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বৃহৎ পাইকারী বাজার চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে পেঁয়াজের দাম কমছে। যদিও বাজারে এখন আর ভারতীয় পেঁয়াজ আসছে। দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ার কারণে ভারতীয় পেঁয়াজের আইপি (আমদানি অনুমতিপত্র) বন্ধ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে পাবনা, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর থেকে বিভিন্ন জাতের বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজের মজুদ রয়েছে। যার ফলে দামও নিম্নমুখী রয়েছে। গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। গত দুই সপ্তাহ আগে সেই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। তবে বর্তমানে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়।
জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি–১ (তাহেরপুরী), বারি–২ (রবি মৌসুম), বারি–৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছরজুড়েই কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আর আমদানি করা হয় বাকি চার লাখ টন। মূলত এই আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারের ওপর খুব বড় প্রভাব ফেলে।
পেঁয়াজের আড়তদাররা বলছেন, পেঁয়াজের বাজার চাহিদা ও যোগানের ওপর নির্ভরশীল। চাক্তাই খাতুনগঞ্জের প্রায় আড়তদার কমিশনের ভিত্তিতে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। অর্থাৎ পেঁয়াজ আমদানিকারক যে দাম নির্ধারণ করে দেন, সেই দামে পেঁয়াজ বিক্রি করেন তারা। এর বিনিময়ে কেজিপ্রতি তারা নির্ধারিত একটি কমিশন পেয়ে থাকেন। তাই আড়তদারদের পক্ষে দাম উঠানামা করার কেনো সুযোগ নেই। আড়তদারদের পক্ষে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা সম্ভব নয়। কিন্তু আমাদের দেশে পেঁয়াজের দরবৃদ্ধির সাথে সাথে প্রশাসনের লোকজন আড়তে অভিযান পরিচালনা করে। এতে আতঙ্ক তৈরি হয়। অথচ আড়তদাররা পেঁয়াজ আমদানি করেন না।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাজারে বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ নেই। ইতোপূর্বে ব্যবসায়ীদের কাছে যা পেঁয়াজ ছিল, তা বিক্রি হয়ে গেছে। এখন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দেশি পেঁয়াজ আসছে। সরবরাহ বাড়ার কারণে দামও কমতির দিকে রয়েছে।
আশরাফুল আলম নামের একজন ভোক্তা জানান, দেশে পেঁয়াজের উচ্চ ফলনের পরেও ব্যবসায়ীরা কারসাজির মাধ্যমে দাম বৃদ্ধি করেছিল। তবে সে সময় সরকার তাৎক্ষণিক ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে নেই, তারপরেও কিন্তু দাম কমছে। বিষয়টি ইতিবাচক।












