একদম পরিষ্কার না হলেও মোটামুটি আন্দাজ করতে পারলাম ঘটনা কী! রাজার বাহুবল, সৈন্যবল, অস্ত্রবল, সম্পদবল নয় এ গ্রহের নানান দেশ এখন শাসিত হয় ব্যবসাবলে; যা থেকে মুক্ত নয় এমনকি এখন অস্ত্রবল, সৈন্যবল এমনকি সম্পদবলে প্রবলভাবে বলিয়ান পরাক্রমশালী চায়নাও! কারণ ঐ ব্যবসাবলের চাবিকাঠি যাদের হাতে আছে সেখানে চায়না এখনো নাবালক। ডব্লিউ টি ও মানে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা নামে এ গ্রহের একসময়ের কলোনিয়াল দস্যু প্রভুরা একটি সংস্থা বানিয়ে রেখেছে, যা নাকি সময়ে সময়ে বদলে দেয় ব্যবসার নানান নিয়মকানুন নিজেদের প্রয়োজনমাফিক। পুঁজিবাদ যতোই প্রতিযোগিতাকে উৎসাহিত করুক না কেন, ক্ষেত্রবিশেষে সেটিকে নিয়ন্ত্রণও করে। উদ্দেশ্য একটাই, তা হল প্রফিট ম্যাঙ্মিাইজেশন বা লাভ বৃদ্ধিকরণ।
ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপাইটরি রাইটস বা মেধাস্বত্ব, ট্রেডমার্ক এসব রক্ষা করা হল বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা কর্তৃক বিশ্বব্যাপী ব্যবসার গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করার তেমনি একটি আইনি অস্ত্র। তথাকথিত উন্নত ও ধনী দেশগুলোতে এইসব আইনি অস্ত্র অত্যন্ত কঠোরভাবে মানা হয়। তারপর আবার তারা প্রমাণ করতে চায় যে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা অতোটা নির্দয় নয় বিশেষত দুর্বলদের ক্ষেত্রে। বরং বড়ই দয়ার শরীর তার। এক সময়ে কলোনিয়াল দস্যুতার শিকার হয়ে যেসব দেশ নিঃস্ব হয়ে আজ চরম দারিদ্রের মধ্যে মানবেতর ভাবে দিনানিপাত করছে, সেসব দেশকে এ নিয়ে কিছুটা ছাড় দিয়ে রেখেছে তারা। ফলে কোন তুমুল শক্তিশালী বৈশ্বিক কর্পোরেশনের মেধাস্বত্ব বা ট্রেডমার্ক ঐসব দেশের ছোটখাট কোনও কোম্পানি ভঙ্গ করলেও তাদেরকে কিছু বলে না তারা। সেরকম ছাড় এখনো পেয়ে আসছে উন্নয়নশীল বাংলাদেশও। তবে চায়নার ব্যাপারে সেই ছাড় নাই। যদিও চায়নিজ বুদ্ধিতে চায়নিজরা নানান ভাবে ঐ সবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আসছে প্রতিনিয়ত, তারপরেও বেইজিং এর মতো বৈশ্বিক শহরের ব্যাপারে চায়নিজ সরকার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ঐ আইন মাথা পেতে নিতে বাধ্য হয়েছ, নিজেদের ব্যবসা বৃদ্ধির খাতিরেই। ফলে এখানে খোলামেলা ভাবে মেধাস্বত্ব বা ট্রেডমার্ক বা উভয়ই ভঙ্গ করে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করা যায় না। বিক্রি করে তা তারা চুপেচাপে, লুকিয়ে চুরিয়ে।
সে কারণেই যেমন কুনমিং এয়ারপোর্টে দুই ছোকরাকে চুপেচাপে ঠারেঠুরে ঐরকম আইফোন বিক্রি করতে দেখেছি আমরা। তেমনি এখানেও এই হকার ঐসব আইন ভঙ্গ করে বানানো খেলনাগুলো বিক্রি করতে পারছে না খোলাখুলি। খেলনার স্টক তার রেখেছে তাই সে ঐ সিঁড়িঘরের সিঁড়ির তলায় লুকিয়ে। ওখান থেকে একটাই মাত্র এনে সেটি নিয়ে ফুটপাতের কায়দামতো জায়গায় সে এমনভাবে বসে থাকে তাতে মনে হবে, সে বুঝি এইমাত্র ওইটি কিনে বেরিয়েছে ঐ খেলনার দোকান থেকে। শুধুমাত্র সম্ভাব্য ক্রেতা দেখলেই, সম্ভবত সে এমন কিছু একটা করে যাতে যারা ঐ মাল পেতে চায় কমদামে, আকর্ষিত হয় শুধু তারাই। ভাষাগত ব্যাপক বাঁধা থাকা সত্ত্বেও যেমন হয়েছিল তা ঠিকই দীপ্রর চক্ষুগোচর।
আজকাল এ গ্রহের পরিবর্তিত উৎপাদন ব্যবস্থা, সেটির নাম আউটসোর্সিং, সেটির কারণে ইউরোপ আমেরিকার প্রযুক্তি হাতে পাওয়ার সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে চায়না নানান বৈশ্বিক কর্পোরেশনের আসল পণ্য তৈরি করার পাশাপাশি মেধাস্বত্ব, ট্রেডমার্ক ভঙ্গ করে একদম আসল পণ্যের প্রতিরূপ বানায় প্রচুর। কারণ বাজার আছে সে সবের, তাদের নিজদেশে যেমন, আছে তেমনি দেশের বাইরেও। তবে বিক্রি করতে হয়ে সেগুলো গেরিলা কায়দায়। এর বাইরেও প্রচুর নিম্নমানের পণ্যও বানায় এরা শুধুমাত্র ট্রেডমার্ক আইন ভঙ্গ করে। কথা হচ্ছে একটু দূরে এই মুহূর্তে দীপ্র অভ্রর সাথে এখানকার ফুটপাতের হকারের যে খেলনাটি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চলছে, সেটি যে কোন কাতারে পড়েছে তা তো জানি না। ওদের আলোচনাই বা চলছে কিভাবে তাও তো বুঝতে পারছি না। তবে এ আলোচনার মুখ্যভাষা যে দেহভাষা বুঝতে পারছি তা, দুইপক্ষের সপ্রচুর হাত পা মুখের ব্যবহার দেখে।
একটু ফুসরত পেয়ে আদার ব্যাপারী মন আমার, যখন বৈশ্বিক ব্যবসাবিষয়ক এসব জাহাজের খবর নিয়ে ব্যস্ত ছিল এতক্ষণ, সেই ভাবনায় ছেদ পড়লো এইমাত্র, যখন দেখলাম চায়নিজ ছোকরা অনেকটা ছোঁ মেরেই একটু আগে দীপ্রর হাতে তুলে দেয়া তার নতুন আনা বাঙটি নিয়ে নিল! আর তারই প্রতিক্রিয়ায় দীপ্র বেশ জোরেই ‘চল অভ্র যাই। নেব না আমরা এইটা’ বলে দ্রুত আসতে শুরু করেছে এইদিকে।
কী বাবা কী হল? দাম যা বলেছ তোমরা তা কি পছন্দ হয়নি নাকি তার? দুপুত্র কাছে আসতেই জিজ্ঞেস করলাম
‘না, বাবা দাম নিয়ে না। আমি আগেই বলেছিলাম বক্সটা খুলে দেখবো, হেলিকপ্টারটা চলে কি না। সে কিন্তু তখন কিছু বলেনি। কিন্তু যেই না আমি বঙটা খুলতে গেছি, একদম অসভ্যের মতো আমার হাত থেকে ওটা কেড়ে নিয়ে গেছে দেখো নি? তাই চলে এলাম।’ গজ গজ করতে জানাল দীপ্র!
হুম তা অবশ্য ঠিকই বলেছ। আমরা তো কাল সকালেই চলে যাব এখান থেকে। এখন যদি ঐ বাঙে হেলিকপ্টার না থেকে অন্য কিছু থাকে, আর দেশে গিয়ে না ধরো হোটেল রুমে গিয়েই তা খুলে অন্য কিছু পাই, তখন আর তাকে পাবো কোথায়?
‘ওটার দামও কিন্তু অনেক। খালি খালি ঐ কপিটা না নেয়াই ভাল হয়েছে ভাইয়া? চল বাবা, যাই এখন খেলনার দোকানে। আসলটাই কিনে নেই আদিব ভাইয়ের জন্য।’ বেশ উৎসাহে মুখ খুললো এবার অভ্র। ওর চেহারায় একই সাথে উৎসাহ ও নিশ্চিন্ত হবার ঝিলিক দেখে বুঝলাম, ভাইয়ার সাথে আগে দ্বিমত না করলেও আর চায়নিজ হকারের দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় ও নিজের মুখ না খুললেও ঐটি কেনার ব্যাপারে তুমুল আপত্তি ছিল ওর। এদিকে, পিতৃহীন আদিবের জন্য ওইরকম একটা সন্দেহজনক জিনিষ কেনার ব্যাপারে সায় পাচ্ছিলাম না আমিও মন থেকে। আমি তো ভালো করেই জানি আদিবের পিতা আমারই সহোদর অকালপ্রয়াত শামিমের এসব ব্যাপারে কী রকম হাত খোলা ছিল। অতএব অভ্রর কথায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচে তৎক্ষণাৎ ঘুরে রওয়ানা দিলাম খেলনার স্টোরের দিকে যেতে, যেতে জিজ্ঞেস করলাম দীপ্রকে যে কথাবার্তা চালিয়েছে ওরা কীভাবে? আর দামই বা কতো ছিল ওটার।
‘ও তো একটু একটু ইংরেজি জানে দেখলাম। ভালোভাবে বলতে না পারলেও বোঝে। আমি অবশ্য পুরো সেন্টেন্স না বলে একটা ওয়ার্ড বলেছি, যেমন প্রাইস হোয়াট? নট গুড। এইরকম আর কী। তবে যখন বললাম ওপেন ইট প্লিজ, বোঝে নাই। তাই আমি নিজেই ওটা খুলতে গেছি যখন ও মনে হয় রেগে গেছিল। ওটার দাম দোকানেরটার চেয়ে ওয়ান ফিফটি কম ছিল।’
এরই মধ্যে সেই খেলনার স্টোরের মুখে এসে পৌঁছুতেই, অভ্র দিল ভৌ দৌড় ভেতরের দিকে, সাথে সাথেই অনুসরণ করলো দীপ্রও একই ত্রস্ততায়।
মোটামুটি নিশ্চিত জানি যেহেতু স্টোরের ভেতরে দেখা মিলবে কোথায় ওদের, তাই ওদের এই দৌড়ঝাঁপ নিয়ে মাথা ঘামালাম না মোটেও। বরং ধীরে সুস্থে বিশাল অথচ ঘিঞ্চি মানে অনেকটা সিঙ্গাপুরের সেরাঙ্গুন রোডে অবস্থিত বাংলাদেশিদের শপিংমক্কা, মোস্তফা শামসুদ্দিন স্টোরের আদলে সাজানো এই খেলনা স্টোরের নানান সেলফ দেখতে দেখতে এগুচ্ছি পুত্রদের দিকে। উদ্দেশ্য যদি চোখে পরে কোন স্কুলব্যাগ ট্যাগ তবে এখনি না কিনলেও ওর মায়ের মতামত নিয়ে পরে হলেও কেনা যাবে তা অভ্রর জন্য। যদিও খেলনার দোকানে অন্য কোথাও স্কুল ব্যাগ দেখেছিলাম কি না মনে পড়ছে না। কিন্তু তা থাকতেই বা দোষ কী? দুটোইতো বাচ্চাদের জিনিষ।
নাহ, পড়লো না স্কুলব্যাগ চোখে কোনও সেলফেই। তবে তার বদলে চোখে পড়লো বেশ কয়েকটা বড় বড় সেলফ জুড়ে থাকা নানান বয়সী বাচ্চাদের উপযোগী বিশ্বখ্যাত লেগো সেটগুলো। এই কিছুকাল আগেও অভ্র ছিল লেগো সেটের তুমুল ভক্ত। প্রতিবারই যখন দেশের বাইরে গেছি, একটাই বায়না থাকতো তার, যা হল এই লেগো সেটের নানান সিরিজ আনা। আর একবার হাতে পেলেই হল, যতোই জটিল হোক কিচ্ছু আসে যেতো না তার, তুমুল মনোযোগে তা নিয়ে বসে পড়তো ও বিশেষত ছুটির দিনে। অবস্থা এমন ছিল যে ওটা না মেলানো পর্যন্ত ও নাওয়া খাওয়ার কথাও ভুলে থাকতো। আচ্ছা এখন তাহলে ওর জন্য একটা লেগো সেট কিনলেই বা কেমন হয়? দীপ্রর জন্য তার পছন্দের একাধিক অ্যাপলসামগ্রী কেনা হলেও ওর জন্য তো কিছুই কেনা হয়নি।
‘বাবা, বাবা নিয়ে এসেছি ওটা, চলো পে করতে চল ’
এরই মধ্যে হেলিকপ্টার সেকশন থেকে বাছাই করে একটা প্যাকেট বগলদাবা করে হাজির হয়ে দীপ্র তাড়া দিতেই, ওর পেছনে আদিব ভাইয়ুর জন্য আসল হেলিকপ্টার নিতে পারা আনন্দে উজ্জ্বল হাসিমুখে দাঁড়িয়ে থাকা অভ্রকে বললাম
দেখো তো বাবা, এখানকার কোনও লেগো সেটটা তুমি নিতে চাও।
‘না বাবা, লাগবে না আমার এসব। চল না এই মার্কেটে খুঁজে দেখি পেট শপ আছে কী না?”
বড়ই মায়া লাগলো ওর কথা শুনে। দেশে ফেলে আসা তার পোষা কুকুর প্লুটোর জন্য খেলনা কেনাটা তার কাছে এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, অবলীলায় ও নিজের পছন্দের খেলনা ও দিচ্ছে বিসর্জন! দিনের প্রথমভাগটা ওর সেই পেট শপ খুঁজতে গিয়ে খরচ করে ফেলার পর, এখন আর তার সেই দাবীতে তেমন জোর নাই। কিন্তু তারপরও দেখছি আশা ছাড়েনি ও। নাহ আরেকবার শেষ চেষ্টা করে দেখতেই হয়! এরকম প্রতিজ্ঞা মনে মনে করে দু পুত্রকে বললাম চল যাই ওইদিকের কাউন্টারে পে করে, এই স্টোর থেকে বেরিয়ে শপিংমলটা ঘুরে দেখি।
অতপর খেলনার দাম এই স্টোরের যেদিক দিয়ে ঢুকেছি তার উল্টা দিকের কাউন্টারে মিটিয়ে, স্টোর থেকে বেরিয়ে বেশ বড়সড় এই শপিংমলটার গোটা নিচতলা ঘুরেও খুঁজে পেলাম না কোন পেট শপ। মনে মনে কেন জানি আগে থেকেই মনে হচ্ছিল যে থাকলে পেট শপ থাকবে নিচতলাতেই, অতএব এখানে তা আর না খুঁজে বেরিয়ে যাবো ভাবছি যখন, তখনি চোখে পড়লো, খেলনার স্টোরটির ঠিক উল্টা দিকের ডানে এক কোণায় থাকা, মাঝারি আকারের বইয়ের দোকানটি! দেখেই মনে হল যদিও জানি, এইখানকার বুকশপে চায়নিজ ভিন্ন অন্যকোনও ভাষার বই থাকা দুরাশা, তারপরও পুত্ররা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে যখনই নতুন কোন দেশে বেড়াতে যাবে, তখন যাতে ওরা বইয়ের দোকানকেও লিস্টিতে রাখে সেই কথা ভেবে বললাম, চল যাই তো দেখি ঐ বইয়ের দোকানটা একটু।
আমার কথায় বিনাবাক্য ব্যয়ে দুজনেই রাজি হতেই, দ্রুতই পা চালিয়ে গিয়ে ঢুকলাম সেই বইয়ের দোকানে। ঢুকেই বুঝলাম, যা ভেবেছিলাম ঘটনা তাই! গোটা বইয়ের দোকানটাই চায়নিজ। তবে মজার ঘটনা হল এরই মধ্যে দুপুত্র কি করে যেন টের পেয়ে গেছে, কোন দিকটায় আছে বাচ্চাদের বইয়ের অংশ। দুজনেই দৌড়ে চলে গেছে ভেতরের সেই সেকশনে। গভীর মনোযোগে বাইরের দিকের সেলফের নানান বইয়ের প্রচ্ছদের ছবি দেখে দেখে যখন বুঝতে চেষ্টা করছি কোন বইটি হতে পারে কোন বিষয়ের, বা আছে কি না কোন গ্লোবাল বেস্ট সেলারের চায়নিজ অনুবাদ, ঠিক তখনই শুনতে পেলাম ডাকছে অভ্র ‘‘বাবা, বাবা এদিকে আসো। দেখে যাও এখানে পেয়েছি ‘ডায়েরি অব ডি উইম্পি কিড!’’
বলে কী! এখানে তা হলে ইংরেজি বইও আছে দেখছি! এ ভেবে আসছি, বলে দ্রুত ওদের কাছে গিয়ে হাজির হতেই দেখি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পাতা উল্টিয়ে যে বইটি দেখছে অভ্র সেটি হল, তার অতি পছন্দের লেখক জেফ কেনির লেখা, ‘ডায়েরি অব উইম্পি কিড’ এর লেটেস্ট ভার্সন, যেটি ওর জন্য কেনা হয়েছে মাস কয়েক আগে এখানে আছে সেটিরই চায়নিজ ভার্সন! তবে এরই মধ্যে দ্রুত পাতা উল্টিয়ে গোটা বইটি এক নজরে দেখে সন্তুষ্ট মনে বেশ বিজ্ঞের ভঙ্গিতে রায় দিয়েছে অভ্র যে, অনুবাদ এটির মোটেও চায়নিজ মানে ফালতু বা নকল কিছু না হয়ে, একদম ঠিকঠাক হয়েছে!
লেখক : প্রাবিন্ধক, ভ্রমণ সাহিত্যিক।