সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাত্রায় ব্যর্থ হয়ে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি ট্রলার টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে ফিরেছে। এ ট্রলারে শিশুসহ দেড়শ রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষ ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। সাগরে তিন দিন কাটানোর পর গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে সাগরে ভাসমান একটি ট্রলারকে জেলেরা টেনে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সৈকতে মহেষখালী পাড়া ঘাটে নিয়ে আসে। এসময় যাত্রীরা কান্নাকাটি করে নেমে পড়ে। এতে স্থানীয় দালালরা অনেককে জোর পূর্বক পাহাড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ রোহিঙ্গাদের।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে টেকনাফ মহেষখালী পাড়ার ইউপি সদস্য জহীর আহমদ বলেন, সাগরে যাত্রীবাহী একটি মালয়েশিয়াগামী ট্রলার ভাসমান দেখে জেলেরা টেনে কূলে নিয়ে আসেন। ট্রলারে দেড়শ মতো যাত্রী ছিল। সবাই বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বসবাসকারী। এদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু ছিল। ঘাটে ওই ট্রলারটি এখনো ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। তবে রোহিঙ্গারা যে যার মতো চলে গেছে। বিষয়টি আমি প্রশাসনকে অবহিত করেছি।
কথা হয় ট্রলার থেকে নেমে মেরিন ড্রাইভে বসে থাকা হামিদ হোসেনের সাথে। এসময় তার পাশে সাত শিশুসহ পাঁচ নারী বসে কান্নাকাটি করছিল। তারা সবাই উখিয়া বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। হামিদ হোসন বলেন, ক্যাম্পের পরিস্থিতি খুব খারাপ প্রতিদিন খুনাখুনি হচ্ছে। সে কারণে ক্যাম্পে বেরিয়ে উন্নত জীবনের আশায় সাগরপথে মালয়েশিয়া পাড়ি দিচ্ছিলাম। আমরা ট্রলারে প্রায় দেড়শ জন ছিলাম। সেখানে আমার শিশু সন্তানসহ ৬ জন পরিবারের সদস্য আছে। তার ভাষ্য মতে, প্রথমে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে দালালদের মাধ্যমে টেকনাফের একটি পাহাড়ে ৫ দিন ছিলাম। সেখান থেকে ছোট নৌকা নিয়ে সাগরে থাকা এ ট্রলারে উঠি। ট্রলারে আমার মতো অনেকে ছিল। এরপর মাঝিরা ইন্দোনেশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সাগরে তিনদিন ঘুরাঘুরি করে। এক পর্যায়ে কূলের কাছাকাছি এসে মাঝিমল্লারা ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ছোট নৌকা দুটি আমাদের ট্রলারটি টেনে কূলে নিয়ে আসে। মূলত আমরা মালেশিয়ার উদ্দেশ্যে ইন্দোনেশিয়া যাত্রা করেছিলাম।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, সাগরপথে মালয়েশিয়াগামী একটি যাত্রীবাহি ট্রলার টেকনাফে কূলে ফিরে আসার খবর শুনেছি। তবে বিষয়টি কোস্ট গার্ড দেখছেন। এ প্রসঙ্গে টেকনাফ কোস্ট গার্ডের স্টেশন কর্মকর্তা লে. কমান্ডার সোলেমান কবির জানান, এ ধরনের একটি সংবাদ আমরা পেয়েছি। ঘটনাস্থলে যাত্রীবিহীন ট্রলারে সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমার খোঁজ খবর নিচ্ছি।