ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী ও অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ ৫১ দিনে গড়িয়েছে। এই সময়ের মধ্যে গাজায় প্রায় ৪০ হাজার টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েল। গত রোববার (২৬ নভেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সঙ্গে কথা বলার সময় গাজা সরকারের গণমাধ্যমবিষয়ক কার্যালয়ের প্রধান সালামা মারুফ এতথ্য জানিয়েছেন। সালামা মারুফ বলেন, গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর দিন থেকে এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় প্রায় ৪০ হাজার টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। তাদের নির্বিচার হামলায় গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশই মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। গাজাকে বসবাসের অযোগ্য করে তোলার উদ্দেশ্যেই এমন বর্বরতা চালাচ্ছে তারা। সালামা মারুফ বলেন, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত শিশুর সংখ্যা গত বছর সারাবিশ্বের সব সংঘাতে প্রাণ হারানো শিশুদের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। উপত্যকার বৃহত্তম হাসপাতাল আল–শিফা আর সচল নেই। এখন আমাদের জরুরি ভিত্তিতে বড় ধরনের একটি ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গত ৭ অক্টোবর হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী। সাত সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা হামলায় ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি শিশু ও নারী।
জানা গেছে, এই যুদ্ধে গাজায় এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ১৫০ শিশু ও ৪ হাজারের বেশি নারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৩৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। আর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রাণ গেছে ১ হাজার ২০০ জনের। নিহতদের মধ্যে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সৈন্য রয়েছে তিন শতাধিক। এদিকে, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল–হামাসের চারদিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে রোববার (২৬ নভেম্বর) খাদ্য, পানি ও ওষুধসহ দুই শতাধিক ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে। চুক্তি অনুযায়ী, গাজায় জিম্মি প্রায় ৫০ শিশু ও নারীকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। আর প্রত্যেক ইসরায়েলির বিনিময়ে তিনজন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিচ্ছে ইসরায়েল।