দেড় বছর আর ২১ ইনিংস পর শান্তর অসাধারণ সেঞ্চুরি

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বুধবার , ১৮ জুন, ২০২৫ at ১২:১৭ অপরাহ্ণ

সময়টা মোটেও ভাল যাচ্ছিল না নাজমুল হোসেন শান্তর। এরই মধ্যে হারিয়েছেন ওয়ানডে এবং টিটোয়েন্টির অধিনায়কত্ব। সাদা বলের দলেও জায়গা পাচ্ছেননা নিয়মিত। টেস্ট ক্রিকেটে খানিকটা এগিয়ে থাকলেও আসছিলনা বড় কোন ইনিংস। অবশেষে টেস্টে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটলো নাজমুল হোসেন শান্তর। ২১ ইনিংস এবং প্রায় দেড় বছর পর সেঞ্চুরির দেখা পেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সবশেষ ২০২৩ সালের নভেম্বরে সিলেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন শান্ত। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি শান্তর ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। নানা কারণে একটা নেতিবাচক পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন শান্ত। অতিবড় সমালোচকও মানছেন, লঙ্কানদের সাথে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে শান্ত মনের দিক থেকে মোটেই চাঙ্গা ও ফুরফুরে ছিলেন না। পরিবেশপরিস্থিতি কোনোটাই তার অনুকূলে ছিল না। এক কথায় ‘ভাঙাচোরা’ মন নিয়ে গলে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন শান্ত। তবে মাঠের ক্রিকেটে তার কোনো আঁচ পাওয়া গেলো না। মনের মধ্যে যাই থাক, শান্ত সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করেছেন নিজ দক্ষতায়। দেখিয়ে দিয়েছেন ইচ্ছা শক্তি থাকলে যে কোনো পরিস্থিতিতে সাফল্য পাওয়া সম্ভব। মাঝের সময়টা খুব খারাপ না কাটলেও টেস্টে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি তেমন। ২০২৩ সালের জুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এক টেস্টে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি ( ১৪৬ ও ১২৪) করে দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছিলেন শান্ত। তারপর সেই বছর নভেম্বরে সিলেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৫ রানের ইনিংসটিতেও শান্তর কোয়ালিটি ফুটে উঠেছিল। কিন্তু এরপর শেষ ২১ ইনিংসে (, ১৫, , , , ২০, ১৬, , ৩৮, ২০, ৮২, ৩১, ১৯, , ২৩, , ৩৬, ৪০, ৬০, ২৩) আর শতরানের দেখা পাননি এ বাঁহাতি। মাঝখানে এক ইনিংসে ব্যাট করেননি শান্ত।

গতকাল যেন স্বরূপে ফিরলেন টাইগার অধিনায়ক। দলকে টেনে নিয়ে গেলেন সামনে থেকে। গলে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিল বাংলাদেশ। ধীর শুরু করেন দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম আর এনামুল হক বিজয়। ১০ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি বিজয়। আসিথা ফার্নান্ডোর বলে উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। সেট হয়ে আউট হন আরেক ওপেনার সাদমান ইসলাম। ৫০ বলে ১৪ রানে তার ইনিংস। উইকেট পান থারিন্ডু রত্নানায়েকে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলছিলেন মুমিনুল হক। কিন্তু আরও একবার ইনিংস বড় করতে না পারার হতাশায় ডুবতে হয় তাকে। ২৯ করে রত্নানায়েকের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। সেখান থেকে শান্ত আর মুশফিকের জুটি। এখন পর্যন্ত ১৯৮ রান যোগ করে অবিচ্ছিন্ন আছেন তারা। শান্ত নিজের হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ১০৭ বলে ৫টি চার আর একটি ছক্কায়। সেঞ্চুরিতে পৌছান ২০২ বলে। মেরেছেন ১১টি চার এবং একটি ছক্কা। যেভাবে আস্থার সাথে এগিয়ে যাচ্ছেন শান্ত তাতে তার ক্যারিয়ার সেরা ১৬৩ রানকেও টপকে যেতে পারবে। এখন ১৩৬ রানে অপরাজিত শান্ত। তার সেরা ইনিংসটাও শ্রীলংকার বিপক্ষে পাল্লেকেলেতে ২০২১ সালের এপ্রিলে। এখন দেখার বিষয় নিজের ইনিংসটাকে বড় করার পাশাপাশি দলের ইনিংসটাকে কোথায় নিয়ে গিয়ে রাখতে পারে শান্ত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচ্যাম্পিয়ন হোবার্ট রেখে দিয়েছেন রিশাদকে
পরবর্তী নিবন্ধমুশফিক যেন পুরানো চাল ভাতে বাড়ে