দেড় দশকে যোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা ডলারের দর স্থিতিশীলে অফশোর ব্যাংকিং ভূমিকা রাখবে

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১০ মার্চ, ২০২৪ at ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ

শেখ হাসিনার সরকার গত দেড় দশকে যোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক এবং নবনিযুক্ত অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন এর বড় প্রমাণ। এই টানেলের এক পাশ যেহেতু আমার উপজেলায় পড়েছে, তাই এই অর্জনে আমার উচ্ছ্বাস একটু বেশি। শুধু যোগাযোগ নয়, সাড়ে ৮ লাখ ভূমিহীন, গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি এই উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে আমার এলাকায় ১১০টি পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি।

গতকাল শনিবার সকালে নগরীর সার্কিট হাউজে চট্টগ্রামে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। দেশের ইতিহাসে প্রথম নারী অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ ভিন্ন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বের নিকট উন্নয়নের বিস্ময়। এখন দক্ষ মানবশক্তি রূপান্তরের কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এখন স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর হচ্ছে।

তিনি বলেন, করোনা মহামারি ও রাশিয়াইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবের পরেও আওয়ামী লীগ সরকার সুপরিকল্পিতভাবে দেশ পরিচালনা করছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী চিন্তাধারায় জিডিপি, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি হয়েছে, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি হচ্ছে। বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা চলমান আছে। সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু হয়েছে। এই পেনশন স্কিমকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য সাংবাদিকদের ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ডলার সংকট এবং হুন্ডি প্রসঙ্গে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, হুন্ডি দেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। হুন্ডির বিরুদ্ধে সরকার সজাগ রয়েছে। হুন্ডির বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন সাংবাদিকরা। তাদের লেখার মাধ্যমে হুন্ডিকে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি হুন্ডি যে একটি দেশের জন্য কত ক্ষতিকর তা সাধারণ মানুষকে বোঝানোর ক্ষেত্রে সাংবাদিকেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। হুন্ডির বিরুদ্ধে বেশি বেশি লেখার জন্য তিনি সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি হুন্ডি প্রতিরোধে প্রবাসীদের আয়ের প্রণোদনা বাড়ানোর ব্যাপারটি সরকারের যথাযথ স্থানে তুলে ধরবেন বলে জানান।

রিজার্ভ ও ডলারের মূল্যমান স্থিতিশীল করতে অফশোর ব্যাংকিং ব্যবস্থা ভূমিকা রাখবে জানিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডলার সংকট কাটাতে এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিয়োগ ও সঞ্চয়কে আইনি কাঠামোতে আনার জন্য গত সংসদের শেষ অধিবেশনে অফশোর ব্যাংকিং আইন পাশ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার কার্যক্রমকে একটি আইনি কাঠামোতে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন অফশোর ব্যাংকে যে কেউ সঞ্চয়ী হিসাবও খুলতে পারবেন। এজন্য তারা মুনাফাও পাবেন।

তিনি বলেন, দেশ থেকে পাচার হওয়া সব অর্থই ফিরিয়ে আনার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেসব স্থানে পাচার হওয়া অর্থ জমা রাখা হয়েছে এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে রয়েছে, সেইসব অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এরই মধ্যে কয়েকটি দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক খাদ্য সংকটের মধ্যেও খাদ্য নিরাপত্তা অব্যাহত আছে। প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েক বছর ধরে বলছেন নিজের অল্প জমি থাকলে সেখানেও চাষ করেন। আমাদের দেশের জমির উর্বরতা বেশি। নিজ স্থান থেকে আমরা একটু চেষ্টা করলে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব এবং নিজের পরিবারের চাহিদা মেটাতে পারে।

মতবিনিময় সভায় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং পটিয়া আসনের এমপি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, দক্ষিণের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শিবলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদ্বিতীয়বার পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি
পরবর্তী নিবন্ধ৫০ টাকা চাঁদার জন্য বাস হেল্পারের মাথা থেঁতলে দিলো লাইনম্যান