দেওয়ানহাট ওভারব্রিজ ভেঙে হবে নতুন ব্রিজ

ব্রিজটির দায়িত্ব সিডিএর কাছে হস্তান্তর করছে চসিক এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পর কাজ শুরুর পরিকল্পনা

| রবিবার , ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৭:৪৩ পূর্বাহ্ণ

ব্রিজটির দায়িত্ব সিডিএর কাছে হস্তান্তর করছে চসিক এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পর কাজ শুরুর পরিকল্পনা

হাসান আকবর 

ভেঙে ফেলা হবে দেওয়ানহাট ওভারব্রিজ। আয়ুষ্কাল ফুরিয়ে যাওয়ায় নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এই ব্রিজটি ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ব্রিজটির দায়িত্ব চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কাছে হস্তান্তর করছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু করার পর সিডিএ ওভারব্রিজটি নিয়ে কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করছে। নগরীর যান চলাচলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দেওয়ানহাট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হয় ৫ যুগের বেশি আগে। ষাটের দশকে পাকিস্তান আমলের মাঝামাঝি ব্রিজটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। দ্য ইঞ্জিনিয়ার্স নামের একটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এটি নির্মাণ করে। নির্মাণকালীন কিছু ত্রুটির জন্য স্বাধীনতার পরে এটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। ১৯৭৯ সালের দিকে এসে ব্রিজটিতে বড় ধরনের সংস্কার কাজ পরিচালনার পর যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে এই ব্রিজ রেল চলাচলকে কেন্দ্র করে দুই ভাগ হয়ে যাওয়া নগরীর উভয় অংশের যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখে আসছে।

ব্রিজটির স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে বেশি ওজন ধারণ করে টিকে রয়েছে। এই ধরনের ব্রিজ সংস্কারে রিসাইক্লিং কার্পেটিং করা হয়। এতে আগের পিচ খোদাই করে তুলে সৃষ্ট গর্তে নতুন করে পিচ ঢালাই করা হয়। কিন্তু দেওয়ানহাট ওভারব্রিজে তা হয়নি। এতে করে বিভিন্ন সময় সংস্কারের নামে ব্রিজটির উপর হাজার হাজার টন পিচ ঢালাই করা হয়েছে। এতে ব্রিজটি কেবল উঁচু হয়নি, ওজনও বেড়েছে। ‘ডেথ ওয়েট’ নামের এই ওজন প্রতিনিয়ত ব্রিজটির ক্ষতি করছে।

অপরদিকে এই ব্রিজ নির্মাণের সময় স্টিল সেক্টরের এমন জয়জয়কার ছিল না। বাংলা রড দিয়ে তৈরি ব্রিজটি ধারণক্ষমতার বেশি ওজন বহন করছে। এতে করে দীর্ঘদিনের ব্যবহার এবং ওভারলোডের কারণে ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ৬০ বছরের বেশি পুরনো ব্রিজটির স্ট্রাকচারাল আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে গেছে মন্তব্য করে একাধিক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, জোড়াতালি দিয়ে ব্রিজটিকে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। তবে এর মূল কাঠামো যেমন পিলার, গার্ডার ও ক্রস গার্ডারে কোনো সংস্কার বা জোড়াতালির সুযোগ নেই। এজন্য এতে শত শত ফাটল দেখা দিয়েছে। ব্রিজে ব্যবহৃত সেকালের রডগুলোর অবস্থা শোচনীয়। রডগুলো ভিতরে ফুলে গেছে, মরিচা ধরেছে। এগুলোর উপর আর ভরসা করার অবস্থা নেই।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ব্রিজটি নিয়ে নগরবাসী শঙ্কা প্রকাশ করেছে। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর উপস্থিতিতে সিটি কর্পোরেশন এবং সিডিএর বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা বৈঠক করেন। বৈঠকে ব্রিজটির দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশন থেকে সিডিএকে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত হয়। সিডিএ ব্রিজটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করে দেবে। স্টিল স্ট্রাকচারের ব্রিজটির উচ্চতা নিয়ে রেলওয়ের আপত্তির বিষয়টি মাথায় রেখে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।

সিডিএর দায়িত্বশীল একজন প্রকৌশলী বলেছেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষে দেওয়ানহাট ওভারব্রিজ ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণের পদক্ষেপ নেয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযত দিন যাচ্ছিল ততই গতি পাচ্ছিল ভাষা আন্দোলন
পরবর্তী নিবন্ধস’মিলে কাঠের স্তূপে মিলল মেছো বাঘের দুই শাবক