নগরকে বাসযোগ্য, ঝলমলে এবং দৃষ্টিনন্দন পর্যটন শহরে পরিণত করতে স্বল্পমেয়াদী ১২টি প্রকল্পসহ নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। গতকাল এ বিষয়ে টাইগারপাস নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে সভা হয়েছে। সেখানে এসমেক বাংলাদেশ নামে একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোর নানা দিক তুলে ধরে। এতে চট্টগ্রামকে পর্যটন শহর হিসেবে গড়ে তুলতে যেসব সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন বা কীভাবে চট্টগ্রাম শহরকে পর্যটনবান্ধব করা যায় তা উঠে এসেছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটির প্রস্তাবনায়। চসিক সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে যেগুলো বাস্তবায়ন করার সুযোগ রয়েছে তা আরো যাচাই–বাছাই করা হবে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কয়েকদিনের মধ্যে চসিকের আরেকটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর চূড়ান্ত করে প্রস্তাবনাগুলোর ডিপিপি তৈরি করা হবে।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। এসমেক বাংলাদেশের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোহাম্মদ এ সবুর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে পর্যটনের সুযোগ–সুবিধা বাড়াতে নানা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নদী–সাগর, পাহাড়সহ নানা সুবিধা থাকার কারণে পুরো চট্টগ্রামই পর্যটন শহর। এখানে কী নেই? শুধু নেই ফ্যাসিলিটি। একজন পর্যটক এসে এখানে যে সুবিধা পাওয়ার কথা সেগুলো পাচ্ছে না। যে প্রস্তাবনা এসেছে তা একটু চেষ্টা করলে বাস্তবায়নে তেমন বেগ পেতে হবে না।
১২ প্রকল্প যা আছে : স্বল্পমেয়াদী ১২ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ফিরিঙ্গিবাজার থেকে কালুরঘাট ব্রিজ পর্যন্ত নদীকে ঘিরে বিভিন্ন পার্ক স্থাপন এবং পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধি করা। প্রস্তাবিত পার্কের মধ্যে মেরিনা পার্ক, মনুমেন্ট পার্ক, স্পোর্টস এবং কমিউনিটি পার্ক, ইকোপার্ক, ফরেস্ট পার্ক ইত্যাদি রয়েছে।
এছাড়া চর বাকলিয়ায় রিসোর্ট এবং চট্টগ্রাম আই স্থাপন, শহরে ক্যাবল কার স্থাপন এবং ওয়াটার ট্যাঙি সার্ভিসের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব রয়েছে। আগ্রাবাদ ঢেবাসহ শহরের সমস্ত প্রধান জলাশয়কে ঘিরে সৌন্দর্যবর্ধন, পার্ক তৈরি, ওয়াকওয়ে নির্মাণ, ওয়াটার ফ্রন্ট ডাইনিং পানির ফোয়ারা স্থাপন।
প্রস্তাবনায় ১৫০ কিলোমিটার খাল সংস্কার করে নগরের খালগুলোতে যাত্রী ও মালবাহী নৌকার চলাচলে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে খালের উভয় পাশে সাইকেল চালানোর রাস্তা, ওয়াকওয়ে সবুজায়ন পরিষেবা করার কথা বলা হয়।
বাটালি হিল ও সিআরবির মধ্যে ইকোব্রিজ র্নিমাণ এবং শহরে আন্তর্জাতিক মানের ৪৫টি মেগা মল নির্মাণের মাধ্যমে চট্টগ্রামকে একটি আন্তর্জাতিক মানের শহরে রূপান্তরিত করা যায়। এছাড়া পেইড কার পার্কিং বিল্ডিং নির্মাণ এবং অন্যান্য সড়কে পার্কিং স্থাপন প্রকল্পেরও প্রস্তাবনা রয়েছে।
নগরে ট্রাফিক ও নির্বিঘ্নে পরিবহন চলাচলের বিষয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় শৃঙ্খলা আনতে নানা সুপারিশ রয়েছে। শহরের জন্য মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পের জন্য একটি নির্দিষ্ট ট্রাফিক মডেলের ওপর ভিত্তি করে পরিবহন ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনাসহ একটি সমন্বিত মাস্টার প্ল্যান তৈরি প্রয়োজন বলেও এসমেক বাংলাদেশের প্রেজেন্টেশনে উঠে আসে। মাস্টার প্ল্যানে প্রকল্প বিবেচনা করারও প্রস্তাবনা আসে। যেমন রেলস্টেশন ও বাস স্টেশন শহরের বহিঃসীমানায় স্থানান্তর করা।