সকালের শিউলি ঝরা উঠোন,হালকা শীতের হালকা কুয়াশায়, ফুলের মিষ্টি সুবাস আর কাঁশফুলের দুলুনিতে জানান দেয় মা দুর্গা ধরণীতে এসে গেছে। কাঁসা, ঢাক বাজানোর শব্দ আর উলুধ্বনিতে পুজোর আনন্দ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। সাথে নতুন কাপড় আর কোনদিন কোথায় যাওয়া হবে, কোন জামা বা শাড়িটা পরা হবে, সাথে ম্যাচিং করে অলংকার, টিপ সবকিছু আগের থেকে গুছিয়ে রেখে পুজোর দিনে আনন্দে মেতে উঠি আমরা। ছোটবেলায় বাবাকে দেখতাম খুব ভোরে উঠে গুলগুল(গুগুল) ধূপ দিয়ে সারা ঘরে ধূনা দিতেন।এই ধূপের খুব সুন্দর একটা মিষ্টি গন্ধ সারা বাড়ি মৌ মৌ করতো।ঘরে ঠাম্মা আর মা মিলে খাবার তৈরি করতেন। যেগুলো পুজোতে দেয়া হয় চিড়া, মুড়ির নাড়ু, নারকেলের সন্দেশ, তিলের সন্দেশ। চারদিক থেকে মাইকে সেই পুরোনো দিনের গানগুলো শোনা যেত।
একটা গান লিখো আমার জন্যে/ তোমার আকাশ দুটি চোখে আমি হয়ে গেছি তারা/ ও পলাশ ও শিমুল কেন এ মন মোর রাঙালে, জানিনা জানি না এ ঘুম কেন ভাঙালে। দুপুরে পুজো শেষে চন্ডীপাঠ শুরু হতো।
এখন ওসব গান বা ধর্মীয় গান কম শোনা যায়। যদিও বা আমরা ইউটিউবে যেকোন সময় মন চাইলে শুনতে পারি। আগে খুব সাধারণভাবে পুজো সম্পূর্ণ হলেও সেই পুজোয় যাবার জন্য বেশি মন টানতো।এখন নাচানাচি আর ঠেলাঠেলির জন্য অনেক সময় গিয়ে বাইরে থেকেই চলে আসতে হয়।এবারে পুজোর সাথে চলছে মহামারী করোনা। আমরা অনেক আপনজন হারিয়েছি এই আট মাসে। তাই সবাইকে নিয়ম মেনে মাস্ক আর হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। দূরত্ব বজায় রেখে মা দুর্গার আরাধনা করে চলুন সবাই এক সাথে প্রার্থনা করি যেন এই অশুভ শক্তি করোনার হাত থেকে দেশের মানুষ, পৃথিবীর মানুষ রক্ষা পায়। এইবছর সবাই দূরত্ব বজায় রেখে আনন্দ ভাগাভাগি করি এবং দশ ও দেশকে রক্ষা করি। দেশের সুরক্ষা, শান্তি বজায় রাখা আমার, আপনার, সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য। মা দুর্গা সবার মঙ্গল করুন।