শারদীয় দুর্গোৎসবের মহানবমী আজ। গতকাল সন্ধিপূজার মাধ্যমে শুরু হয় মহানবমীর আনুষ্ঠানিকতা। আগামীকাল বিজয়া দশমীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ৫ দিনব্যাপী দুর্গোৎসব।
আজ বুধবার সকাল ৬টায় শুরু হবে মহানবমীতে দেবী দুর্গার বন্দনা। মহানবমীতে ১০৮টি নীলপদ্মে দেবীদুর্গার পূজা শুরু হবে, সেই সঙ্গে ১০৮টি বেল পাতা ও ঘি দিয়েও হবে যজ্ঞ।
শারদীয় দুর্গোৎসবের গতকাল অষ্টমী তিথিতে চট্টগ্রামে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো নগরীর পাথরঘাটায় শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরে এবারও আয়োজন করা হয় কুমারী পূজার। কুমারী রূপে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছর কুমারী মায়ের আসনে বসানো হয় ৬ জন কুমারীকে। দেবী মহামায়ার পাঁচ রূপে সজ্জিত হয়েছিলেন তারা। পূজার শুরুতে কুমারীদের ফুল, চন্দন, বেলপাতা, তুলসি পাতা দিয়ে মন্ত্রপাঠ আর স্তুতিতে বন্দনা করা হয়।
এবারে কুমারী হিসেবের ৬ষ্ঠ বর্ষীয় রাধেশ্রী দত্ত বৃন্দা উমা নামে, ১১ বর্ষীয় সুভদ্রা বিশ্বাস (প্রতীক্ষা) রুদ্রাণী নামে, ৯ম বর্ষীয় আদ্রিজা বিশ্বাস ও ৯ম বর্ষীয় নিভৃত দত্ত কালসন্দর্ভা, ৮ম বর্ষীয় প্রীত ধর কুজ্জ্বিকা নামে, ৭ম বর্ষীয় বৃন্দা দাশ মালিণী নামে পূজিত হন।
গতকাল সকালে কুমারী মায়ের পূজা দেখতে ও অঞ্জলি দিতে পাথরঘাটায় শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরে হাজারো ভক্তের ঢল নামে। দুপুরে পূজা শেষে অঞ্জলি দেন ভক্তরা।
সকাল সাড়ে ১০টায় মাতৃরূপে ফুল, চন্দন, বেলপাতা, তুলসী পাতা দিয়ে শুরু হয় পূজা আর্চনা। কুমারীপূজায় রাধা গোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরের শ্যামল সাধু মোহন্ত মহারাজের আদেশে পৌরোহিত্য করেন বলরাম দাস। উল্লেখ্য, ২০০৪ সাল থেকে শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরে কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
গতকাল মহা অষ্টমীর দিনে চট্টগ্রামে প্রতিটি পূজা মণ্ডপ লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। গভীর রাত পর্যন্ত মন্ডপ গুলোতে দর্শনার্থীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
জেএমসেন হল পূজামণ্ডপ : বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম মহানগর এর উদ্যোগে জেএমসেন হল প্রাঙ্গণে গতকাল মহাঅষ্টমী পূজা উদযাপিত হয়। দুপুরে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক – ই আজম বীর প্রতীক। এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো: জিয়াউদ্দীন এবং ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক কামরুজ্জামান।
এরপর পরিদর্শনে আসেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ। এসময় উপস্থিত ছিলেন পূজা পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক অর্পন কান্তি ব্যানার্জী এবং সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) এড. নিখিল কুমার নাথ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রত্নাকর দাশ টুনু, শ্রীপ্রকাশ দাশ অসিত, সাংবাদিক প্রদীপ শীল, পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক এড. নটু চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক সুকান্ত মহাজন টুটুল, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক অঞ্জন দত্ত, প্রমুখ।
মহা অষ্টমীতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠান মালায় ছিল লোককবি কল্পতরু ভট্টাচার্য ও তার দলের পরিবেশনায় শ্রী শ্রী দুর্গা জাগরণ পুঁথি পাঠ। পুষ্পিতা ভট্টাচার্য্যের পরিচালনায় সঙ্গিতানুষ্ঠান ‘পূর্বা’, সন্ধ্যায় সন্ধ্যারতি, রাতে গৌরী নন্দী পরিচালিত সঙ্গীতানুষ্ঠান ‘মঙ্গলময়ী মহামায়া এবং টেলিভিশন শিল্পীদের পরিবেশনায় বিশেষ ধর্মীয় সঙ্গীতানুষ্ঠান ‘মহিষাসুরমর্দিনী’।