চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুবাই থেকে আসা এক যাত্রীর কাছ থেকে প্রায় ৬ কোটি টাকা দামের স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে। শার্টের ভিতরে বিশেষ কায়দায় বাড়তি পকেটওয়ালা আলাদা একটি শার্ট পরে ৮২টি স্বর্ণের বার তিনি নিয়ে এসেছিলেন। গোপন খবরের ভিত্তিতে কাস্টমসের একটি দল বিমানবন্দর এনএসআই টিমের সহায়তায় মোহাম্মদ এনামুল হক নামের ওই যাত্রীকে আটক এবং তার কাছ থেকে স্বর্ণের চালানটি উদ্ধার করে। দুবাইয়ে ক্লিনার হিসেবে কর্মরত মোহাম্মদ এনামুল হক ঘন ঘন যাতায়াত করতেন। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি চট্টগ্রাম থেকে দুবাই গিয়েছিলেন। এনামুল হক কক্সবাজারের চকরিয়ার নয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা জনৈক ফারুক আহমেদের পুত্র।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কাস্টমস সূত্র জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ বাংলাদেশ বিমানের বিজি–১৪৮ নম্বর ফ্লাইটটি দুবাই থেকে চট্টগ্রামে অবতরণ করে। বিমানের যাত্রীদের মাঝে এনামুল হকের কাছে স্বর্ণের বার রয়েছে মর্মে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বিমান থেকে নামার পর থেকে তাকে চোখে চোখে রাখা হয়। বোর্ডিং ব্রিজ থেকে তাকে অনুসরণ করা হয়। ইমিগ্রেশন পার হয়ে নিজের লাগেজ নিয়ে বের হওয়ার সময় কাস্টমস এবং এনএসআই কর্মকর্তারা তাকে সাথে কিছু আছে কিনা জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু তিনি ‘কিছু নাই’ বলে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাকে চ্যালেঞ্জ করে এক পাশে নিয়ে শরীর তল্লাশি করা হয়। তার পরণে শার্টের ভিতরে আলাদা একটি শার্ট পাওয়া যায়। ওই শার্টটিতে বেশ কয়েকটি পকেট ছিল। এসব পকেটে কালো স্কচ ট্যাপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় সর্বমোট ৮২টি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। ২৪ ক্যারেটের স্বর্ণগুলোর ওজন দাঁড়ায় ৯ কেজি ৫৯ গ্রাম এবং আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকা বলে জানান কাস্টমস কর্মকর্তারা। পরে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সহায়তায় মোহাম্মদ এনামুল হককে গ্রেপ্তার করে পতেঙ্গা থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।
বিমানবন্দর কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার রোকসানা খাতুন দৈনিক আজাদীকে বলেন, শাহ আমানত বিমানবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ মুছার কাছে আসা গোপন খবরের সূত্র ধরেই আমরা চালানটি আটক করতে সক্ষম হয়েছি।
এনএসআই বিমানবন্দর টিমের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, করোনা মহামারীর অচলাবস্থা কেটে ওঠার পর এটিই শাহ আমানতে স্বর্ণের বড় চালান উদ্ধারের ঘটনা। এর আগে সিগারেট ও কয়েকটি স্বর্ণের বার ধরা পড়েছিল। তিনি বলেন, এনামুলের পাসপোর্ট তল্লাশি করে বুঝা গেছে, তিনি ঘন ঘন দুবাই যাতায়াত করেন। আমাদের ধারণা তিনি স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।