নির্ধারিত সময়ে সম্পদ বিবরণী জমা না দেওয়ার অভিযোগে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান এবং তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার মামলা অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের মাস দুয়েক আগে শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পান দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের এমিরিটাস এডিটর নাঈমুল ইসলাম খান। ২০২৪ সালের ৬ জুন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে। তবে ওই বছরের ৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। পরবর্তী সময়ে তার পরিচালিত পত্রিকাগুলো বন্ধের ঘোষণা দেন। খবর বিডিনিউজের।
গত জানুয়ারিতে নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। সে সময় তাদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিসও পাঠানো হয়। দুদক জানায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় দুদক আইনের ২৬(২) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ১৬৩টি ব্যাংক হিসাব পাওয়া গেছে। এসব হিসাবে প্রায় ৩৮৬ কোটি টাকা জমা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা ইতোমধ্যে তোলা হয়েছে। বর্তমানে হিসাবগুলোতে রয়েছে ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা। নাঈমুল ইসলাম খানের নামে ব্যাংক হিসাব রয়েছে ৯১টি। ১৯৯০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত এসব হিসাবে মোট ২৩৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা জমা হয়। এর মধ্যে ২৩৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা তোলা হয়েছে। বর্তমানে হিসাবগুলোতে রয়েছে ৬৪ লাখ টাকা। তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির নামে ১৩টি ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১৩ কোটি টাকা তোলা হয়েছে। ২০০৪ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এসব লেনদেন হয়। এছাড়া নাঈমুল ইসলাম খানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ৪৬টি ব্যাংক হিসাবে মোট জমা হয় ১২৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এসব হিসাবে এখন ২১ লাখ টাকা রয়েছে। এসব লেনদেন হয় ২০০৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে। নাঈমুল ইসলাম খান এবং তার স্ত্রী–সন্তানরা মোট ১২টি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। এসব কার্ডের সর্বমোট সীমা ২৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬৭ টাকা। কার্ডগুলোতে বর্তমানে ৪৮ হাজার ৪০৮ টাকা বকেয়া রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ২৫ অগাস্ট নাঈমুল ইসলাম খানের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়। স্থগিত করা হয় তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব। তবে এর আগেই তারা প্রায় সব অর্থ তুলে নেন।












