দুই মাস পর দুইজন গ্রেপ্তার

ষোলশহরে পিটিয়ে হত্যার আরেকটি ঘটনা

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৮ নভেম্বর, ২০২৪ at ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহরে পিটিয়ে হত্যার আরেকটি ঘটনার তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। দ্বিতীয় এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তারা হলেন, মো. জানে আলম ও গাজী মো. আলমগীর ওরফে আলম। এরমধ্যে জানে আলম দিনমজুর ও আলমগীর হচ্ছেন শেখ ফরিদ মাজার সড়কের নৈশ প্রহরী। গতকাল সকালে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে খুলশী থানা এলাকা থেকে এ দুজনকে গ্রেপ্তার করে খুলশী থানা পুলিশ। এরপর আদালতে পাঠানো হলে দুজনই দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

পুলিশ জানায়, সরকার পতন পরবর্তী অস্থিরতার মধ্যে নগরীর দুই নম্বর গেট এলাকায় পিটিয়ে হত্যার দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে গত ৯ আগস্ট। দুই নম্বর গেট কবরস্থানের পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার ভিকটিম হচ্ছেন মো. ইসলাম ওরফে বিটু নামের ২৫ বছর বয়সী এক যুবক।

খুলশী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোজাম্মেল হক দৈনিক আজাদীকে বলেন, ৯ আগস্ট সকালে ষোলশহর এলাকায় বিটু নামের ওই যুবককে কয়েক দফা পেটানো হয়। পরে তাকে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকে বলা হয়, মৃত অবস্থায় বিটুকে আনা হয়েছে।

এ ঘটনায় ভিকটিম বিটুর মা বাদী হয়ে খুলশী থানায় মামলা দায়ের করেছেন উল্লেখ করে পুলিশ কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বলেন, এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে লাশের একটি ছবি পাওয়া যায়। সেখানে লাশের পাশে জানে আলমকে দেখা যায়। সে সূত্র ধরে জানে আলম এবং তার দেওয়া তথ্যে আলমগীরকে আটক করা হয়। তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, নিহত বিটু মাদকাসক্ত এবং চুরি ছিনতাইয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। তার কাছে ব্লেড ও ছুরি থাকত সব সময়। পথচারীদের ভয় দেখিয়ে ছিনতাই এবং বিভিন্ন স্থানে চুরি করতো। তার বিরুদ্ধে অন্তত সাতটি চুরিছিনতাই ও মাদকের মামলা আছে। সেগুলোতে বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তারও হয়েছিল। পুলিশ জানায়, গত ৮ আগস্ট রাত ৩টার দিকে বিটু বায়েজিদ থানা এলাকার বাসা থেকে বের হয়। ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারে তা উল্লেখ করা হয়েছে। পরে তাকে পিটিয়ে খনু করার অভিযোগ আনা হয়। পুলিশ আরো জানায়, ভোর রাতে বিটু ষোলশহর এলাকার সোলাইমান বাদশার নার্সারির প্রহরীকে গলায় ছুরি ধরে জিম্মি করে লোহা ও চেয়ার চুরি করেছিল। সকালে এক পথচারীর ব্যাগ টান দিয়ে পালানোর সময় তাকে দুই থেকে তিনটি মোটরসাইকেল আরোহী পাঁচ থেকে ছয়জন এবং স্থানীয় কয়েকজন মিলে ধাওয়া করে। এসময় সে দৌঁড়ে কর্ণফুলী মার্কেটের পাশে নালায় ঢুকে পড়ে। ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় তাকে নালা থেকে বের করে এনে গণপিটুনি দেয় বাইক আরোহী এবং স্থানীয়রা মিলে। এরপর তাকে রিকশায় করে ষোলশহর এলাকায় নিয়ে সড়ক বিভাজকের উপর বেঁধে পুনরায় মারধর করা হয়। সেখানে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় পরে তাকে বিপ্লব উদ্যানে নিয়ে বেঁধে রেখে দফায় দফায় মারধর করা হয়।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে সরকার পতন পরবর্তী পিটিয়ে হত্যার প্রথম ঘটনাটি প্রকাশ পায় ২১ আগস্ট। হত্যাকাণ্ড হয়েছিল গত ১৪ আগস্টে। ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। সে ঘটনার ভিকটিম হচ্ছেন মো. শাহাদাত হোসেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধহাজারী গলির দোকানপাট খুলেছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক