আইনি লড়াই চালিয়ে দীর্ঘ দুই বছর পর চেয়ারম্যান পদ ফিরে পেয়েছেন বাঁশখালীর গণ্ডামারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লেয়াকত আলী।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন এ বিচারপতি ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি মুবিনা আসিফের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ পূর্বের আদেশ বাতিল করে লেয়াকত আলীকে গণ্ডামারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে পুনর্বহালের আদেশ দিয়েছেন। লেয়াকত আলীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও মুহম্মদ মিজানুর রহমান।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ৪ জুন বাঁশখালী সরকারি আলাওল ডিগ্রি কলেজ মাঠে উপজেলা বিএনপির ব্যানারে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুনি ও আওয়ামী লীগকে খুনির দল বলে ‘খুনি হাসিনার গদিতে আগুন জ্বালাও একসাথে, দেশ বাঁচাও জালেম সরকার হঠাও’ সহ বক্তব্য প্রদান করায় রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ এনে লেয়াকত আলীকে চেয়ারম্যান পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহর সুপারিশে ২০২৩ সালের ৬ মার্চ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এরপর থেকে তিনি আর চেয়ারম্যান পদ ফিরে পাননি। ওই ইউনিয়নে এতদিন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন ওসমান গণী।
২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি এস. আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঠিকাদারের কাজে বাঁধা প্রদান ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বাঁশখালী থানায় দায়েরকৃত মামলায় লেয়াকত দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট মুক্তি পান।
চেয়ারম্যান পদ ফিরে পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় গণ্ডামারা ইউপি চেয়ারম্যান লেয়াকত আলী বলেন, ‘‘শেখ মুজিবকে নিয়ে কটুক্তি ও শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অপরাধে আমাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। আদেশটি আজকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন মহামান্য হাইকোর্ট। কারাগারে থাকা অবস্থায় আমাকে একটি শোকজ নোটিস দেওয়া হয়। আমি শোকজ নোটিসের লিখিত জবাব দিয়েছিলাম। আমার জবাব সন্তোষজনক হলে আমাকে চেয়ারম্যান পদ আগে ফেরত দেওয়ার কথা। আর যদি সন্তোষজনক না হয় তাহলে আমাকে আগেই স্থায়ী বরখাস্ত করার কথা। কিন্তু আমাকে চেয়ারম্যান পদে আর বহালও রাখেনি, স্থায়ী বরখাস্তও করেনি। আর পদ ফিরিয়ে না দিয়ে আমাকে এক প্রকার জুলুম করেছে। আজকে মহামান্য হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে আমি সন্তুষ্ট।’’