সুখ দুঃখেই মানুষের জীবন। মানুষের জীবনের ধারা কখনোই সমানতালে চলেনা। এখানে সুখ দুঃখ দুটোই জীবনের পরম অংশীদারিত্ব বহন করে থাকে। মূলত মানুষ সুখ দুঃখ নামক বাগানের একটি ফুটন্ত ফুল। আর জীবন ধারায় কোনো মানুষই এই দুটি ধারাকে কখনো বাদ দিতে পারে না। তাই আমাদেরকে সবসময় মনে রাখতে হবে। জীবন সবসময় সুখময় থাকবে যেমন সত্য নয়। তেমনি জীবনে দুঃখও চিরকাল বহমান থাকে না। মূলত এগুলো সমুদ্রের জোয়ার ভাটার মতই প্রবাহমান। জীবন নদীতে আমাদের চলার পথ কখনোই একরকম যায় না। আজ আমরা হয়ত অনেক সুখ জীবন যাপন করছি আগামীকাল আমাদেরকে দারিদ্র বা দুঃখের সাথে থাকতে হবে না এমন কোনো নিশ্চয়তা। আমাদেরকে মানুষ হিসেবে সবসময় মনে রাখতে যেন আমরা কখনোই আত্নঅহংকারে নিজেদের বিলিয়ে না দিই। আমাদের সকলের জীবনে দুঃসময় বা দুর্দিন এসে থাকে প্রকৃতিরই নিয়মে। এর ব্যতিক্রম হওয়ার সুযোগ কম। দুঃসময় মানুষের জীবনেরই অংশ। এসময়ে আমাদের ভেঙে গেলে চলবে না বরং দুঃসময়ে নিজেকে মানসিকভাবে আরো বেশি সাহসিক প্রেরণার সাথে এগিয়ে নিতে কাজ করতে হবে। আর দুর্দিনে আমাদেরকে বেশি বেশি অতীত সাফল্যকে স্মৃতি রোমস্থনে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের ব্যস্তময় বাস্তবিক জীবনে আমরা অর্জিত সাফল্যকে খুব দ্রুতই ভুলে যেতে বসি। কেন না আমরা সবসময় নতুন নতুন সাফল্য বা অর্জনের জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকি। একটা সাফল্যকে বেশি দিন স্থান দিই না। দ্রুতই নিত্যনতুন সাফল্যের জন্য নিজেদেরকে নতুনভাবে ব্যস্ত করে তুলি। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিজেদের দুঃসময়ে অতীতের সেরা সাফল্য বা অর্জন বা প্রাপ্তিগুলোকে বেশি বেশি স্মরণ করা। গৌরবময় সাফল্যগুলোর প্রকৃত স্বাদ পুনঃ মনে করে নিজের মনকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করা। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কিছু গৌরবময় অতীত সাফল্য অন্তর্নিহিত আছে। এই সাফল্যের দিনগুলো, মুহূর্তগুলো আমাদের চলমান দুঃসময়ে পুনরায় স্মরণ করে নিজেদের দুর্দিনগুলো মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।মনে রাখতে হবে মানুষের জীবনে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ একে অপরের সাখে পরিপুরক। কোনোটিকে পেছনে ফেলার সুগোগ নেই বা কোনোটিকে অস্বীকার করারও সুযোগ নেই। একজন মানুষের জীবনে যেকোনো সময় দুঃসময় বা দুর্দিন আসতে পারে এটা বাস্তবিক জীবনের চিরন্তন সত্য বিষয়। তাই এ সংকটময় সময়ে আমাদের ভেঙে গেলে চলবে না। বরং দুর্দিনেই আমরা নিজেদেরকে নতুনভাবে গড়ে তোলার সুযোগ পেয়ে থাকি। অতীতের ভুলভ্রান্তি দূর করার জন্য দুঃসময় অনেকটা আমাদেরকে মানসিকভাবে শক্তিশালী করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আর দুঃসময়ে আমরা আপন পর বা বন্ধু ও শত্রুকে প্রকৃতভাবে জানার সুযোগ পাই। কেননা আমরা সকলেই জানি বিপদেই বন্ধুর পরিচয়। তাই আমাদের প্রত্যেককে মনে রাখা জরুরি নিজের দুঃসময়ে নিজের অতীত সাফল্যের স্মৃতির রাজ্যে আমাদের বিচরণ করা অনেক বেশি জরুরি। ঐ অতীত সাফল্যই আমাদের বর্তমানের দুঃসময় কাটাতে এবং ভবিষ্যৎ ভালোদিনের জন্য উৎকৃষ্ট প্রেরণা দিতে পারে। আমাদের এই সংক্ষিপ্ত জীবনে ফেলে আসা দিনের সাফল্যগুলো পুনঃ মনে স্থান দিয়ে নিজেদেরকে উজ্জীবিত রাখতে হবে। যাতে করে নিজের দুঃসময়গুলো শক্তভাবে প্রতিরোধ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সন্ধান পাই। আসুন আমরা নিজেদেরকে মানবিক, মনুষ্যত্ববোধ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলি। নিজের দুঃসময়ে যেমন আমরা কখনো ভেঙে পড়বোনা ঠিক তেমনি অন্যের দুঃসময়ে আমরা যেন সহানুভুতির বহিপ্রকাশ ঘটায়।