চট্টগ্রাম কাস্টমসে সার্ভার বিভ্রাটের কারণে ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। গতকাল সারাদিনে আমদানির পণ্যের শুল্কায়নে বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়েছে মাত্র সাড়ে ৮’শটি। অথচ স্বাভাবিক দিনে কাস্টমসে গড়ে বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয় আড়াই হাজারের মতো। বলা যায় স্বাভাবিক দিনের তুলনায় তিন ভাগের একভাগ কাজ হয়েছে।
এদিকে যথা সময়ে পণ্যের শুল্কায়ন করতে না পারার কারণে বন্দর থেকে পণ্য খালাসও ব্যাহত হয়েছে। সেবাগ্রহীতারা বলছেন, সার্ভার ত্রুটির এই সমস্যাটি দীর্ঘদিন ধরে চলমান রয়েছে। এ বিষয়টি কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময় জানানো হয়েছে। কিন্তু স্থায়ী কোনো সমাধান মিলেনি। প্রায় সময় সার্ভার হ্যাং করে ও নেটওয়ার্ক চলে যায়। এতে আমদানিকারকের কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যকে গতিশীল করার লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে অটোমেশনের যাত্রা শুরু হয়। এক সময় অ্যাসাইকুডা প্লাস প্লাস ভার্সন থাকলেও গত ২০১৩ সাল থেকে কাস্টমসে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড পদ্ধতি চালু হয়। এই পদ্ধতিতে আামদানি রপ্তানি কার্যক্রমের প্রায় সবকিছুই অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। কিন্তু মাঝে মাঝেই সার্ভারের গতি কমে যাওয়া কিংবা বিকল হয়ে যাওয়ার ফলে আমদানিকারকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দেখা গেছে, যে কাজ এক মিনিটে হওয়ার কথা সেটি করতে পাঁচ মিনিট লাগছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী রিগ্যান দৈনিক আজাদীকে বলেন, গত রোববার থেকে অ্যাসাইকুডা সিস্টেম অস্বাভাবিক ধীরগতিতে চলছে। আমরা বলতে গেলে কোনো কাজই ঠিক মতো করতে পারছি না। আজকে (গতকাল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়েছে ৪০০টির মতো। এরপর কিছু দাখিল হয়েছে। সার্ভারের সমস্যা নিয়ে আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছি। তবে গত দুই তিনদিন ধরে সার্ভারের সমস্যা চরম আকার ধারণ করছে। এখন আমদানিকারকরা সঠিক সময়ে পণ্য খালাস করতে না পারলে বন্দরের ডেমারেজ গুণতে হবে। একটা বিল অব এন্ট্রি দাখিলসহ শুল্ক কর পরিশোধ করতে যেখানে ৫ মিনিট লাগার কথা, সেখানে আধা ঘণ্টা–এক ঘণ্টায়ও কাজ হচ্ছিল না।
এ ব্যাপার জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের উপ–কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, গত দুই তিনদিনের সার্ভার একটু স্লো। যার কারণে কাজের ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়ছে। আসলে গত কয়েকদিন আগে আমাদের অ্যাসাইকুডা সিস্টেমের আপগ্রেডেশন হয়েছে। এই কারণেও সমস্যা হতে পারে, আমি শতভাগ নিশ্চিত নই। সন্ধ্যার পর কিছুটা ঠিক হয়েছে শুনেছি। আগামীকাল (আজ) সকালে বিস্তারিত জানতে পারবো।