সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকার ‘বৈধ নয়’ দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, এদেরকে সরাতে হবে? এদেরকে সরাতে হলে আমাদের কী করতে হবে? দফা এক, দাবি এক। সেটা কী? নেতাকর্মীরা তখন সমস্বরে বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। গতকাল শনিবার বিকালে বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে (বেলস পার্ক) বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে ‘তারুণ্যের সমাবেশে’ এসব কথা বলেন তিনি। বর্তমান সরকারকে ‘অবৈধ’ দাবি করে ফখরুল এ সরকারকে ‘মানেন না’ বলে সমাবেশে জানান। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন চাই এবং সেই নির্বাচন চাই সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, এই শেখ হাসিনার অধীনে নয়। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে, নতুন পার্লামেন্ট গঠন করে জনগণের স্বপ্নকে পূরণ করতে হবে। এ সময় সুষ্ঠু নির্বাচনের এ দাবিতে সরকারকে সরানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলেও উল্লেখ করেন এই বিএনপি নেতা। খবর বিডিনিউজের।
তরুণদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত সফলতা আসবে বলে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, এদেরকে পরাজিত করতে হবে। জনগণকে বিজয়ী করতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে, তারেক রহমানকে ফিরিয়ে নিয়ে এসে আমাদেরকে একটা মুক্ত স্বাধীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হবে। আমাদের সকল মানুষকে তারেক রহমানের স্বপ্ন দেখাতে হবে।
গত ১২ জুন বরিশাল সিটি নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ফয়জুল করীমকে ঘুষির বিষয়টিও উঠে আসে বিএনপি নেতার বক্তব্যে।
তিনি বলেন, আমাদের আলেম সাহেব, শ্রদ্বেয় মানুষ। জনগণের পীর সাহেবকে আঘাত করতে পর্যন্ত দ্বিধা করে নাই। আমরা ঘৃণা জানিয়েছি। দেশের দুটি প্রজন্ম ভোট দিতে পারেনি অভিযোগ করে তিনি বলেন, সবাইকে বন্ধ করে রেখে নিজেরা সিল–ছাপ্পড় মেরে আগের রাত্রে ভোট করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোট করে; তারপরে বলে যে, ভোট হয়ে গেছে, আমরা জিতে গেছি। এটা করে কেন? তারা জানে যে, সত্যিকার অর্থে যদি জনগণ ভোট দিতে পারে তাদের (জনগণ) ইচ্ছাটাকে প্রয়োগ করতে পারে তাহলে ১০টা আসনও পাবে না। তাড়াতাড়ি গুটিয়ে সবাইকে পালাতে হবে। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের হিসাব থেকে টাকা তুলে নেওয়া নিয়েও কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, আমাদের ‘অবৈধ সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’ যখন সুইজারল্যান্ড গেলেন তারপরেই পত্রিকায় দেখছি যে, সুইস ব্যাংক থেকে নাকি বাংলাদেশের টাকা উধাও হয়ে গেছে।
আমি জানি না এটার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ আছে কিনা, যোগসূত্র আছে কিনা। কিন্তু সেখান থেকে নাকি আবার উধাও হয়ে গেছে।
ফখরুলের অভিযোগ, আজকে সমগ্র পৃথিবীর মানুষ জানে যে, এরা হচ্ছে চোর। শুধু ভোট চোর না।
আমাদের পকেটও কাটে, পকেট মারও। এই যে বিদ্যুতের বিল দেন, আপনারা কি জানেন বিদ্যুতের বিল দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শতকরা ৩০ থেকে ৪০ টাকা নাই? কোথায় যায়? ওদের কাছে যায়। এই সরকারের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে চুরি করা, ডাকাতি করা। আর চুরি–ডাকাতি করে সেই টাকা বিদেশে পাচার করা এবং সেখানে টাকা রেখে দেয়া।