বেশ কয়েক বছর আগে, পোল্যান্ডে দুইটা নাৎসী কন্সেনট্রেশান ক্যাম্প (অস্উইচ ও বার্কেনাউ) ঘুরে দেখে মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত হয়েছিলাম। মনে কষ্ট পেলেও, মানুষের সেই ঘৃণ্য ইতিহাস জেনেছিলাম সেখানে। ২০২২–এর ডিসেম্বরে জার্মানীর মিউনিখে ঘুরতে গিয়ে দাখাউ (Dachau ) এলাম। হিটলারের এক প্রধান উপদেষ্টা ও পুলিশ–প্রধান হেইনরিখ হিমলারের, পরিকল্পনাতেই দাখাউতে সর্বপ্রথম কন্সেনট্রেশান ক্যাম্প শুরু। জানতাম আবারো মানসিকভাবে কষ্ট পাবো, তারপরেও গেলাম– মানুষ কীভাবে এমন বর্বর হয়? কীভাবে পশুর চাইতেও খারাপ আচরণ করে?
জন্মগতভাবে হিটলার অস্ট্রিয়ান, পরে সে জার্মানীতে আসে। মিউনিখেই তার উত্থান, এবং ধীরে ধীরে বিশ্বকে দ্বিতীয়–বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছিলো। যদিও, রাজনৈতিকভাবে সঠিক, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জয়ী হয়েই ক্ষমতায় গিয়েছিলো, কিন্তু পরে আস্তে আস্তে সব গ্রাস করে, নিজেকে একচ্ছত্র, একনায়ক হিসাবে দাবী করলো। প্রথম–বিশ্বযুদ্ধের পরে, ভার্সেই–চুক্তিতে জার্মানীকে অবমাননা করা হয়েছে, এটাকে কাজে লাগিয়েই জার্মানদের নিজেদের আত্মসম্মানবোধের নামে তীব্র জাতীয়তাবাদ উস্কে দিয়ে ক্ষমতায় গেলো। নাৎসি মানে কী? জার্মানীর সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট (Sozialdemokrat ) পার্টিকে সংক্ষেপে বলতো ঝড়ুর; হিটলারের দল জাতীয়তাবাদী সোশ্যালিস্ট (Nationalsozialist ) শ্রমিকদল। ঝড়ুর–র প্রতিপক্ষ। লোকমুখে Nationalsozialist সংক্ষিপ্ত হয়ে জন্ম নিলো, ঘধুর দলের। পরবর্তীতে রাজনৈতিক দলটাই হায়েনার মত কুখ্যাত নাৎসি–বাহিনী হলো, মিউনিখ ছিলো হেডকোয়ার্টার।
ক্ষমতায় এসে, হিটলার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বা সবধরনের পথের কাঁটাকেই সরিয়ে দিতে শুরু করলো। তাদেরকে বন্দী করা হলো। এছাড়াও, তার মেইন–ক্যাম্ফ (Mein Kampf ) বই ও চিঠিপত্র ইত্যাদিতে ইহুদি–নিধনের নীল–নক্সা করেছিলো। সেই অনুযায়ীও অনেককে বন্দী করলো। এতজনকে কোথায় রাখবে? মিউনিখের উত্তরে দাখাউ শহরের এক পরিত্যক্ত অস্ত্র–কারখানাকে বন্দী–ক্যাম্প বানানো হলো। ১৯৩৩–এর মার্চে এখানেই শুরু কন্সেন্ট্র্যাশান–ক্যাম্পের। বিশ একর এলাকার ক্যাম্পে বন্দি ছিলো কারা? প্রতিপক্ষের (কমিউনিস্ট, সোশ্যালিস্ট) রাজনৈতিক নেতা–কর্মী, ইহুদী, রোমা, জিপসী, নাৎসি–অধিকৃত দেশগুলোর যুদ্ধবন্দী, সমকামী, নাৎসি অত্যাচারের বিরুদ্ধবাদী পাদ্রী, ভিন্ন মতালম্বি খ্রীষ্টান সম্প্রদায় (জেহোভাস উইট্েনস), এলাকার সাধারণ ছিঁচকে চোর থেকে শুরু করে, দাগী আসামী সকলেই এখানে ছিলো।
সোমবারে, মিউনিখের দেড়ঘন্টা দূরে হোলজ্গুঞ্জ এক গন্ডগ্রামে আমার কাজ। আমি ট্রিপ–প্ল্যান করে অ্যামেরিকায় জুম্মা পড়ে প্লেনে আমস্টার্ডাম হয়ে শনিবার দুপুরে মিউনিখে পৌঁছলাম। শনি–রবি মিউনিখ ঘুরেফিরে, রবিবার দিনশেষে হোলজ্গুঞ্জে যাবো। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ– শীতকালের ঠান্ডা। কিন্তু তার থেকেও বিরক্তিকর হলো– মন খারাপ করা ঘনমেঘে ঢাকা দিন– গ্লুমি ওয়েদার। কুয়াশাও নয়, বৃষ্টিও নয়, অথচ বাতাসটা অতিরিক্ত ভেজা ও ভারী। এয়ারপোর্টে নেমেই রেন্টাল–গাড়ি নিয়েছিলাম; আমি নিজেই চালাই। জিপিএস দেখে পনের বিশ মিনিটেই দাখাউ পৌঁছে গেলাম। অনেকেই এসেছে; কিন্তু লক্ষ্য করলাম অনেক ছাত্র–ছাত্রীও আছে। দেশে ‘শিক্ষাসফর’ মানে কক্সবাজার–রাঙ্গামটি–সিলেটে পিকনিকে যাওয়া। অ্যামেরিকা–ইউরোপে দেখেছি কোনোকিছু শিখানোর জন্যই সফরের ব্যবস্থা করে। আমার ছেলেমেয়েরা ফার্মে যেতো চাষবাস দেখতে, বা মিউজিয়ামে যেতো বিজ্ঞান–শিল্পকলা নিয়ে জানতে–বুঝতে, ইত্যাদি। ছুটির দিনেও দেখছি বেশ অনেকগুলো স্কুলগ্রুপ এসেছে।
প্রথমেই বড়সড় একটা ভিজিটস্/ ইনফরম্যাশান–সেন্টার। সেখানে গাইডেড–ট্যুরের টিকিট কাটতে গিয়ে হতাশ হলাম। বিশ মিনিট পরে যেই ইংরেজি ট্যুর হবে, সেটা পুরা বুক্ড্; এরপরেরটা বিকালে আমার জন্যে অনেক দেরী হয়ে যাবে। আরো অনেক ভাষাতেই ট্যুর হবে জার্মান, ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ; আমি এগুলো অল্পস্বল্প জানলেও জুৎ করতে পারবো না। এখানে এসেছি জানতে–শুনতে, উপলব্ধি করতে; গাইডের কথাই ধরতে না পারলে, কী লাভ? কাউন্টারের মেয়েটা আমার অবস্থা বিবেচনা করে, অনেক সাহায্য করলো। বললো, ট্যুর যে নিতেই হবে তা না। পুরা এলাকাটা বিনা পয়সায় নিজেই ঘুরেফিরে দেখতে পারো। আর তোমার মত বিচক্ষণ ব্যক্তি আশা করি, আমাদের গাইডবুক, লিফলেট, ম্যাপ ইত্যাদি দেখে নিজেই একটা সেলফ–গাইডেড ট্যুর করে ফেলতে পারবে। আমিও রাজী হয়ে তার থেকে সব ম্যাটেরিয়াল নিয়ে রওনা দিলাম।
ভিজিটর সেন্টার থেকে হেঁটে একটা ব্রিজ পার হয়ে ক্যাম্পের মেইনগেইট এবং সেসঙ্গে ক্যাম্প অফিস (Jourhaus)। বন্দীরা যাতে না পালাতে পারে, তার জন্যে তৈরি পরিখার উপরে এই ব্রিজ। পরিখা তো কিছুই না, ভিতর থেকে সেটা পর্যন্ত জীবিত পৌঁছানই ছিলো অসম্ভব– দুই লেয়ারের তীক্ষ্ম কাঁটাতারের বেষ্টনি। সম্পূর্ণ ইলেক্ট্রিফাইড, স্পর্শমাত্রই হাই–ভোল্টেজে মৃত্যু। এছাড়াও রয়েছে একটু পরপরই ওয়াচ–টাওয়ার। পাওয়ারফুল সার্চলাইটের আলো, পাহারায় নৃশংস নাৎসি–সৈন্য ও ততোধিক হিংস্র–কুকুর। মেইনগেইটে এসে থমকে গেলাম– এই লেখা আগেও দেখেছি অস্উইচের গেইটে, “Arbeit Macht Frei ” (কাজের বিনিময়ে স্বাধীনতা)। নাৎসিরা বন্দীদের মিথ্যা বলতো, তোমরা ভালোমত কাজ করলে মুক্তি পাবে; আর তাদের দিয়ে যুদ্ধের প্রয়োজনে যত বেশি সম্ভব কাজ করিয়ে নিতো। হায়, মুক্তি! – কেউ কী কোনোদিনও পেয়েছিলো? ২০১৪ সালে অদ্ভুত কোনো এক গ্রুপের মানুষ, বেশ কয়েকটা কন্সেন্ট্রেশান–ক্যাম্পের দরজার ‘অৎনবরঃ গধপযঃ ঋৎবর’ লেখাটা চুরি করে নিয়েছিলো। তিন–চার বছর পরে, সেগুলোকে আবার নেদারল্যান্ডে পাওয়া যায়।
গেইট (জোরহাউজ) পার হলেই, বিশাল উন্মুক্ত–মাঠ, এখানেই প্রতি সকালে বন্দিদের রোলকল হতো। দিনের কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হতো; অথবা দোষী সাব্যস্তদের তাৎক্ষনিক বিচার ও নিষ্পত্তি (মৃত্যু) হতো। নাৎসিদের রেকর্ড অনুযায়ীই দু’লক্ষ বন্দি ছিলো; তারমধ্যে ৩২,০০০ মারা গিয়েছে। এই রেকর্ড কী বিশ্বাসযোগ্য? অন্য কন্সেন্ট্র্যাশান–ক্যাম্পের মতই, আলামত ধ্বংস করতে, নাৎসিরা মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলতো। তাই ধারণা করা হয়, আসল মৃতের সংখ্যা তিন–চারগুন বেশী। মাঠের একপাশে ব্যারাক বত্রিশটার মধ্যে অধিকাংশই নাই, দুয়েকটা রেখেছে মিউজিয়াম হিসাবে। ঘুরেফিরে দেখলাম। পোল্যান্ডে অস্উইচ–বার্কিনাউ দেখার পরে, এখানের ব্যারাকগুলোকে ফাইভ–স্টার হোটেল মনে হয়েছে। খাট–আসবাবপত্র, নিজস্ব লকার, বাথরুম, অনেক অনেকগুণে ভালো।
নাৎসিদের বীভৎসতা যাতে দুনিয়া ভুলে না যায়, সেজন্যে ১৯৫৯–এ প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়ার এক বন্দি ভাস্করের ডিজাইনে এখানে তৈরি হয় ইন্টারন্যাশানাল মনুমেন্টে। কালো লোহার তৈরি মনুমেন্টে কন্সেন্ট্রেশান–ক্যাম্পের ভয়াবহতা ফুটিয়ে তুলে কাঁটাতারের মাঝে ঝুলছে কিছু মানবদেহ। মাঠ থেকে এই মনুমেন্টে যাওয়ার পথ প্রতীকীভাবে কিছুটা নীচে নেমে গেছে মনুষ্যত্ব কতটুকু নীচে নামলে মানুষ এতটা হিংস্র হয়, সেটাই বুঝানো হয়েছে। উল্টাপাশের দেওয়ালে রয়েছে একটা বড় শিকলের রিলিফের মাঝে বিভিন্ন রঙের ত্রিভুজ ও স্টার অফ ডেভিড। এরকম রঙিন ত্রিভুজ ও স্টার অফ ডেভিড ব্যবহার করে বন্দিদের ভাগ ভাগ করে রাখতো। বন্দিদের জামায়ও এই অপমানজনক সিম্বলগুলো সেলাই করে দিতো। রিলিফে শিকল দিয়ে পরাধীনতাও বুঝানো হয়েছে; আবার বন্দিদের নিজেদের মধ্যকার জোরালো সম্পর্কও বুঝানো হয়েছে। একপাশে রয়েছে একটা চারকোনা পাথরের বেদীতে ক্যাম্পে পুড়িয়ে মারা বন্দিদের ছাই–অবশেষ। একটা দেওয়ালে পাঁচটা ভিন্ন ভাষায় লেখা রয়েছে সেই বাণীটা – নেভার এগেইন। মানবসভ্যতার ইতিহাসে এরকম জঘন্যতম ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়; সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যে এই লেখা ইংলিশ, ফ্রেঞ্চ, জার্মান, হিব্রু ও রাশান ভাষায় দেওয়ালে লিখে রেখেছে। যদিও, এই বর্তমান যুগেও মানুষ যুদ্ধ বা গণহত্যা থেকে থেমে থাকেনি।
সেকালের মেইন্ট্যানেন্স বিল্ডিংকে বানানো হয়েছে মিউজিয়াম। এখানে ওয়ার্কশপে বন্দিদের দিয়ে জোরপূর্বক কাজ করিয়ে নিতো। নতুন বন্দিদের রেজিস্ট্রেশান হয়ে গেলে, এখানে তাদের সম্পূর্ণ বিবস্ত্র করে, জোর করে শরীরের সব চুল–লোম কামিয়ে, গোসল করাতো। তাদের আত্মসম্মানকে খর্ব করার জন্যে, অকল্পনীয় অমানবিক আচরণ করতো। মিউজিয়াম ঘুরে অনেককিছুর মাঝে সেই বাথরুমও দেখলাম। আরো দেখলাম ক্যাম্প সম্পর্কিত প্রদর্শনী। হিটলারের উত্থানের কাহিনী, ক্ষমতা দখল, নির্যাতন, নিপীড়ন আরো অনেক কিছুই। বেশীক্ষণ সহ্য করতে পারলাম না; দম বন্ধ হয়ে আসছিলো। বাইরের খোলা মাঠে বের হয়ে এলাম।
বন্দীদের উপরে নাৎসিদের অত্যাচার–নির্যাতন–নিপীড়ন সেগুলো তো ছিলোই। আমরা অনেক পড়েছি, জেনেছি, ছবিতে ডকুমেন্টারিতে দেখেছি। কিন্তু আরেকটা ভয়াল দিক ছিলো এই ক্যাম্পগুলোতে–জীবিত বন্দীদের উপর বর্বরোচিত, নৃশংস বৈজ্ঞানিক ও মেডিকেল গবেষণা। পোল্যান্ডে শুনেছিলাম কার্ল ক্লোবার্গ, জোসেফ মেঙ্গেল, হর্স্ট শ্যুম্যান ইত্যাদি নাম। এখানে শুনলাম সিগমান্ড রাশের (Sigmund Rascher ) একজন ডাক্তার। যে স্বয়ং হিমলারের সরাসরি অনুমোদনে বন্দিদের উপর অকথ্য গবেষণা চালিয়েছিলো। নিজে এয়ারফোর্সের ছিলো বলে, সেই সম্পর্কিত গবেষণা–জীবিত মানবদেহে বায়ুর নিম্নচাপের প্রতিক্রিয়া, অতি নিম্ন তাপমাত্রার প্রতিক্রিয়া, রক্ত জমাট বাঁধার ঔষধ পরীক্ষা। তার আবিষ্কৃত ঔষধে রক্ত জমাট বাঁধে কিনা সেটা পরখ করার জন্যে জীবিত বন্দিদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সেই ঔষধ খাইয়ে, তারপরে গুলি করে দেখা হতো রক্তপাত হচ্ছে কিনা। বন্দিদের বরফভর্তি ট্যাঙ্কে ঘন্টার পর ঘন্টা রেখে হিসাব করা হতো, কতক্ষণ লাগে মারা যেতে; বা বেঁচে থাকলে, সঙ্গে সঙ্গে ফুটন্ত পানিতে চুবিয়ে দেখা হতো বাঁচে কিনা। এসব গবেষণা করা হতো জার্মান এয়ারফোর্সের পাইলটদের কীভাবে রক্ষা করা যাবে সেই পন্থা আবিষ্কারের উছিলায়।
১৯৪৫–এর এপ্রিলে অ্যামেরিকান আর্মী এই বন্দীশিবিরকে মুক্ত করে। এরপর এখানে সেই নাৎসি–বাহিনীকেই বন্দি রাখা হয়েছিলো, বিচারের জন্যে। তারপরে এটাকে নানান কাজে ব্যবহার করা হয় যুদ্ধের পরে ফিরে আসা জার্মান নাগিরকদের অস্থায়ী বাসস্থান (হিটলার এদেরকে বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে দিয়েছিলো, জার্মান জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্যে); অ্যামেরিকানদের বেইস। এরপরে যুদ্ধসময়ের স্মৃতি ধরে রেখে, বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্যে, মিউজিয়াম, ভাস্কর্য ইত্যাদি করলো। মৃতদের জন্যে প্রার্থনা করার উদ্দেশ্যে কয়েকটা উপাসনালয় বানানো হলো ক্যাথলিক, প্রোটেস্টান্ট, রাশান–অর্থোডক্স চার্চ, ইহুদিদের সিনাগগ। এগুলো প্রতিদিনই জনসাধারণের প্রবেশের জন্যে উন্মুক্ত। সেজন্যেই, ক্যাম্পের ভিতরে কারো ঢুকতে টিকিট কাটতে হয় না; শুধু গাইডেড–ট্যুরে পয়সা লাগে। আমি নিজে নিজেই ঘুরে অনেককিছু দেখলাম, মন ভারাক্রান্ত হলো। শীতের বিষন্ন বিকালে আস্তে আস্তে বের হয়ে এসে আমার গন্তব্যের দিকে রওনা দিলাম। মনে একটাই চিন্তা– মানুষ কীভাবে পারে অন্য আর একটা মানুষকে এরকম হেয় করতে, একদম মেরে ফেলতে?
টলিডো, ওহাইও, ২০২৩