দাউদ ইব্রাহিমের মাথার দাম ঘোষণা করল ভারত সরকার

| শনিবার , ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৬:১১ পূর্বাহ্ণ

কুখ্যাত মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিম ও তার নেতৃত্বাধীন অপরাধ সিন্ডিকেট ডি-কোম্পানির শীর্ষ চার সদস্যের মাথার দাম ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। গত বুধবার ভারতের শীর্ষ তদন্ত সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) এক বিবৃতিতে সরকারের এ ঘোষণা নিশ্চিত করেছে। খবর বাংলানিউজের।
ডি-কোম্পানির শীর্ষ চার সদস্য হলেন- ছোটা শাকিল ওরফে শাকিল শেখ, জাভেদ প্যাটেল ওরফে জাভেদ চিকনা, ইব্রাহিম মুশতাক আবদুল রাজ্জাক মেমন ওরফে টাইগার মেমন এবং হাজি আনিস ওরফে আনিস ইব্রাহিম শেখ।
তথ্য অনুযায়ী, দাউদ ইব্রাহিমের মাথার দাম ঘোষণা করা হয়েছে নগদ ২৫ লাখ রুপি। ছোটা শাকিলের মাথার দাম ২০ লাখ রুপি এবং বাকিদের মাথার দাম ১৫ লাখ রুপি নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারি প্রেসনোটে বলা হয়, দাউদ ইব্রাহিম ও তার আন্ডারওয়ার্ল্ড সিন্ডিকেট ডি-কোম্পানির সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, চোরাচালান, মাদক বাণিজ্য, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা, নকল বা জাল মুদ্রা তৈরি ও বাজারে ছাড়াসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। ডি-কোম্পানির বিরুদ্ধে লস্কর-ই তৈয়বা (এলইটি), জইশ-ই মোহাম্মদ (জেইএম) এবং আলকায়দার মতো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ককে নিয়মিত আর্থিক তহবিল ও অন্যান্য সহায়তা প্রদানের অভিযোগও রয়েছে।
সরকার যদি কোনো অপরাধীর মাথার দাম ঘোষণা করে, তার অর্থ- ওই অপরাধীকে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা যদি জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় আইনশৃক্সখলা বাহিনীর কাছে হাজির করে, সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি বা সংস্থাকে মাথার দামের নির্ধারিত অর্থ পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে। এনআইএর প্রেসনোটে বলা হয়েছে, দাউদ ইব্রাহিম ও তার সহযোগীরা কে কোথায় আছেন- সে সম্পর্কে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য যদি কেউ এনআইকে দেন, তাহলেও হবে। সরকারের নির্ধারিত পুরস্কার দেওয়া হবে সেই তথ্যদাতাকে। তধ্য দেওয়ার জন্য দুটি ইমেইল অ্যাড্রেসও দিয়েছে এনআইএ।
দাউদ ইব্রাহিম সম্পর্কে : দাউদ ইব্রাহিমের পুরো নাম দাউদ ইব্রাহিম কাসকার। ১৯৫৫ সালে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি জেলার মামকা গ্রামে জন্ম তার। তার বাবা ইব্রাহিম কাসকার ছিলেন পুলিশের হেড কনস্টেবল। কিশোর বয়স থেকেই ছিনতাই, মারপিটের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন দাউদ। কৈশোর পেরুনোর পর রত্নগিরি থেকে মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাইয়ে পাড়ি জমান। সেখানে মুম্বাইয়ের তৎকালীন শীর্ষ সন্ত্রাসী করিম লালার গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত হন। দাউদ করিম লালার গ্যাং থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান গত শতকের আশির দশকের শেষ দিকে। এরপর গঠন করেন নিজের সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক ডি-কোম্পানি। গঠনের অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই ভারতসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে ত্রাস হিসেবে দেখা দেয় দাউদের ডি-কোম্পানি।
১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ের ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলায় প্রত্যক্ষ ইন্ধন ছিল দাউদ এবং তার সহযোগীদের। সংগঠিত অপরাধের জন্য ইতোমধ্যে ইন্টারপোলের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় আছেন দাউদ। সম্প্রতি ইউনাইটেড নেশনস সিকিউরিটি রেজোল্যুশন ১২৬৭-এর আওতায় দাউদ ইব্রাহিমকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে স্বামী, স্ত্রী ও শাশুড়ি গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধপ্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পে এক নম্বরে আছে কালুরঘাট সেতু : রেলমন্ত্রী