দখল দূষণ ও ভরাটে বিপন্ন কোহেলিয়া নদী

খননের মাধ্যমে পুনরুদ্ধারের দাবি

মহেশখালী প্রতিনিধি | শনিবার , ১৫ মার্চ, ২০২৫ at ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় কালারমারছড়া, মাতারবাড়ী ও ধলঘাটার বুক চিরে বয়ে চলেছে কোহেলিয়া নদী। যুগ যুগ ধরে জোয়ারভাটায় আপন গতিতে প্রবাহিত হচ্ছে। ভরা যৌবনে খরস্রোতা ছিল কোহেলিয়া। এই নদীর পারে স্থাপিত হয়েছে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প। সমপ্রতি দখল, দূষণ ও ভরাটের ফলে হারিয়ে যাওয়ার পথে বসেছে এ নদী। এক সময় এ নদীতে লবণ বোঝাই বড় বোট চলাচল করলেও এখন সাধারণ নৌযান চলাচলেও কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

গতকাল ১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবসে কোহেলিয়া নদীর পাশে ইউনুছখালী বাজারে বেশ কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠন সমন্বিত মানববন্ধনে দাবি তুলেছে বিপন্ন এই কোহেলিয়া নদী পুনরুদ্ধারের।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), কোহেলিয়া নদী রক্ষা কমিটি, কোহেলিয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ও উপকূল সুরক্ষা ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মনুষ্য সৃষ্ট দখলদূষণ ও ভরাটের কারণে কোহেলিয়া নদী মারা গেলে এখানকার শত শত জেলে, লবণচাষি ও ব্যবসায়ীর জীবন হুমকির মুখে পড়বে। পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্ভাবনা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, কোহেলিয়া নদীর আশপাশে চলমান অপরিকল্পিত ভরাট ও দখল প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ করাসহ নদীর সীমানা নির্ধারণ করে তা পুনরুদ্ধার করা উচিত।

কোহেলিয়া নদী রক্ষা কমিটি মহেশখালী আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, কোহেলিয়া যেভাবে দ্রুত ভরাট হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই হারিয়ে যাবে এ নদী। তাই নদীটি খননের ব্যবস্থা করে জেলেদের মাছ ধরার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।

জানা গেছে, মাতারবাড়িতে প্রকল্পের মাটি ভরাট করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ করাকালীন কোহেলিয়া নদীর উল্লেখযোগ্য অংশ পলি মাটিতে ভরাট হয়ে যায়। বর্তমানে প্রকল্পের বিভিন্ন বর্জ্য ও মাটি পাইপের মাধ্যমে সরাসরি কোহেলিয়াতে ফেলা হচ্ছে। ফলে দিন দিন আরো ভরাট হচ্ছে নদীটি। লবণচাষি নুরুল আলম জানান, কোহেলিয়া ভরাটের কারণে পূর্ণ জোয়ারেও এখন বড় ও মাঝারি লবণ পরিবহনের কার্গো বোটসহ বিভিন্ন ইঞ্জিন চালিত নৌযান চলাচল করতে পারছে না। আগে এ নদীতে দেখা যেত পাঁচ হাজার মণ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন লবণের বোট চলাচল করতে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন পেশার মানুষের একমাত্র আয়ের উৎস ছিল এ নদীর মাছ, কাঁকড়া ও লবণ। কোহেলিয়া হারিয়ে যাওয়া মানে মহেশখালীর প্রায় লক্ষাধিক মানুষের জীবনজীবিকা ধ্বংস হয়ে যাওয়া। পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা অবিলম্বে কোহেলিয়া নদী ড্রেজিং করে তা পুনরুদ্ধারের দাবি জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবরকলে বিজিবির গুলি উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধরাসূলের (দ.) মিল্লাতে অটল থাকলেই পরকালে মুক্তি