দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিলে বাধা, সংঘর্ষ

চার পুলিশ ও ২৫ নেতাকর্মী আহত আহ্বায়কসহ গ্রেপ্তার ১০

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৭ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:১৩ পূর্বাহ্ণ

মিছিলে বাধা দেয়ায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়েছে দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা। গতকাল বুধবার বিকেলে নগরের নাসিমন ভবনস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে নূর আহম্মদ সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এসময় চার পুলিশ সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের ২০/২৫ নেতাকর্মী আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ১০ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ ফায়ার করে এবং দুইটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মঞ্জুর আলম তালুকদারসহ সংগঠনটির ১০ সদস্যকে আটক করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আটক ১০ জনসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত শতাধিককে আসামি করে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করে।
জানা গেছে, গত ১০ অক্টোবর দুই সদস্যের দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির পক্ষ থেকে গতকাল স্বাগত মিছিল বের করা হয়। এতে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী।
স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দ দাবি করেন, শান্তিপূর্ণ মিছিল করার সময় বাধা দেয় পুলিশ অতর্কিত লাঠিচার্জ করে। তবে পুলিশের দাবি, মিছিলের অনুমতি ছিল না। মিছিল করে যানজট সৃষ্টি করছিল। তাই মিছিল না করার অনুরোধ করলে উল্টো পুলিশের উপর হামলা করে। এতে কোতোয়ালী থানার এসআই মেহেদী হাসান, এসআই সাদ্দাম হোসেন, এসআই নওশের কোরেশী এবং এসএরআএফ কনস্টেবল শাহাদাত আহত হয়। এদিকে আহত স্বেচ্ছাসেবক দলের তিনজনের নাম পাওয়া গেছে। এরা হচ্ছেন দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জমির উদ্দিন চৌধুরী মানিক, সংগঠনের কর্মী ফরহাদুল আজিজ ও রাসেল রহমান।
আটককৃতরা হচ্ছেন দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মঞ্জুর আলম তালুকদার (৪৩)। আনোয়ারা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মো. নঈমউদ্দীন চৌধুরী (৪৮) ও ইকবাল হায়দার চৌধুরী (৪০)। বাঁশখালী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মো. বেলাল উদ্দিন বাদশা (২২), আব্দুল আলীম (৩৬) ও মো. ওমর ফারুক (২২)। পটিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মো. আজিজ (৩৪), মুরাদুল আলম (৪০), আরমান (২৪) ও মো. তোফায়েল আহম্মেদ (২২)।
ঘটনার বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ওসি জাহেদুল কবির দৈনিক আজাদীকে বলেন, মিছিল করে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। পুলিশ তাদের সরে যেতে অনুরোধ করলেও শুনেনি। পুলিশকে বাধা দেয়। মিছিল থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। তাদের ছোঁড়া ইটপাটকেলের আঘাতে আমাদের চার সদস্য আহত হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ১০ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ ফায়ার করে এবং দুইটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বলেও জানান তিনি।
কোতোয়ালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, তাদের মিছিল না করার শর্তে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে মিছিল করে এবং রাস্তায় এসে যানজট সৃষ্টি করে। এসময় তাদের মিছিল করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করলে অতর্কিত পুলিশের উপর হামলা করে।
দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জমির উদ্দিন চৌধুরী মানিক দৈনিক আজাদীকে বলেন, সদ্য কমিটি গঠন উপলক্ষে আমরা স্বাগত মিছিল বের করি। আমরা অনুমতিও নিয়েছিলাম। কাজীর দেউড়ি থেকে মিছিল শুরু করে নাসিমন ভবনের কাছাকাছি আসতেই পুলিশ আমাদের বাধা দেয়। অতর্কিত লাঠিচার্জ করে। রাবার বুলেট ছোঁড়ে।
মিছিল থেকে প্রথমে পুলিশের উপর হামলা এবং ককটেল ছোঁড়া হয়েছে- পুলিশের এমন দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জমির উদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, এটা মিথ্যা অভিযোগ। আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলাম। অন্য কোনো উদ্দেশ্য আমাদের ছিল না। কিছুই করিনি আমরা। বরং অতর্কিত আমাদের উপর আক্রমণ করেছে। আমাদের ছেলেরা আহত হল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাবেক কাউন্সিলর মানিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
পরবর্তী নিবন্ধনভেম্বরে যে উপজেলা সম্মেলন করতে ব্যর্থ হবে ওই কমিটি ভেঙে দেয়া হবে