এস আলম গ্রুপের গাড়ি সরিয়ে নেয়ার ঘটনায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির তিন নেতাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে এ নোটিশ দেয়া হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার জবাব দিতে বলা হয়েছে।
যাদের নোটিশ দেয়া হয়েছে তারা হচ্ছেন– দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিযান, যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম এবং কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এস এম মামুন মিয়া। তবে এ তিনজনই আজাদীর কাছে দাবি করেছেন তারা নোটিশের কপি হাতে পাননি। এদিকে কারণ দর্শানো নোটিশের পৃথক কপি আজাদীর হাতে এসেছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে বলা হয়, গত শুক্রবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তাদের (যাদের শোকজ করা হয়) নামে দলের নীতি, আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। দলের একজন দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ঘটনার সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতা দলের প্রতি আদর্শিক অঙ্গীকার ভঙ্গ করার শামিল। এ কৃত অপকর্ম দলের সাধারণ নেতাকর্মীদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং কেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার কারণ উল্লেখপূর্বক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লিখিত জবাব রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে নোটিশে।
নোটিশ দেয়ার বিষয়টি আজাদীকে নিশ্চিত করেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম ও সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। শামীম বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে তাদের। মীর হেলাল বলেন, দপ্তর থেকে নোটিশ দেয়ার বিষয়টি আমাকে নিশ্চিত করা হয়।
কারণ দর্শানো নোটিশ প্রসঙ্গে গত রাতে আবু সুফিয়ান আজাদীকে বলেন, শোকজ করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে এখনো নোটিশের কোনো কপি হাতে পাইনি। কপি পেলে জবাব দেব। একই কথা বলেন এনামুল হক এনাম। দুজনই জানান, শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে প্রকৃত সত্য তুলে ধরেছেন তারা।
এস এম মামুন মিয়া আজাদীকে বলেন, মইজ্জ্যারটেক এবং কালুরঘাট কোথাও আমি যাইনি। আমার নামও কেউ বলেনি। শুধু একটি পত্রিকায় আমার নামে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। শোকজ–এর কাগজ পাইনি। পেলে অবশ্যই জবাব দেব।
উল্লেখ্য, একটি ওয়্যারহাউসের ভেতর থেকে বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল দামি গাড়ি সরিয়ে নেয়ার একটি ভিডিও গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। গুঞ্জন রয়েছে সরিয়ে নেয়া গাড়িগুলো এস আলম গ্রুপের। আবু সুফিয়ান ও এনামুল হক এনাম উপস্থিত থেকে গাড়ি সরিয়ে দেয়ার বিষয়টি তদারকি করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। ভিডিওতে এনামুল হক এনামকে এবং আবু সুফিয়ানের গাড়ির ড্রাইভার মনসুরকে দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে গতকাল দৈনিক আজাদীতে ‘ওয়্যারহাউস থেকে বিলাসবহুল কয়েকটি গাড়ি সরিয়ে নেয়ার ভিডিও ভাইরাল’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।