নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণে দক্ষিণ কোরিয়ার ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে আগামী সেপ্টেম্বরে ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়া এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাটে পুরোনো রেল সেতুর উজানে নতুন রেল কাম সড়ক সেতুটি নির্মাণ হবে। এতে ব্যয় হবে ১১ হাজার কোটি টাকা।
ইতোমধ্যে কোরিয়ার ইউসিন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি নতুন সেতু নির্মাণের জন্য সমীক্ষা শেষ করেছে। তারা সমীক্ষা প্রতিবেদন দাখিল করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ের প্রকৌশলী ও নতুন সেতুর প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিনিধির সাথে ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পর খুব দ্রুত ওই প্রকল্পের ডিপিপি তৈরি করে প্ল্যানিং কমিশনে জমা দেয়ার হবে এবং একনেকে অনুমোদনের পর টেন্ডার আহ্বান করা হবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। নতুন সেতুটিতে রেল চলাচলের জন্য ডাবল ট্র্যাক (দুটো লাইন) যেমন থাকবে তেমনি অপর পাশে থাকবে যানবাহন চলাচলের জন্য ডাবল লাইন। নতুন সেতুটি হবে অনেকটা যমুনা সেতুর মতো। একপাশে থাকবে ট্রেন, অপর পাশে যানবাহন চলাচলের জন্য থাকবে সড়ক পথ।
নতুন কালুরঘাট সেতুর প্রকল্প পরিচালক গোলাম মোস্তফা আজাদীকে জানান, কালুরঘাট নতুন সেতু নির্মাণের ব্যাপারে সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে ঋণচুক্তি হবে। কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো–অপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) মূল সেতুর জন্য ৭ হাজার কোটি টাকা দিতে সম্মত আছে। অবশিষ্ট টাকা বাংলাদেশ সরকারের। মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে ৭ হাজার কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহনে ব্যয় হবে ৩ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরে ভ্যাট–ট্যাঙ বাবদ প্রকল্পের অবশিষ্ট টাকা ব্যয় হবে। নতুন বহুমখী কালুরঘাট সেতুটি হবে বর্তমান সেতু থেকে ৭০ মিটার উজানে হালদা নদীর মোহনার কাছাকাছি। নতুন সেতুর অ্যালাইনমেন্ট হবে জানে আলী হাট থেকে গোমদন্ডি রেল স্টেশন পর্যন্ত। এছাড়া সেতুর সাথে সংযোগ সড়কের কাজ করবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ২০২৫ সালের জুলাইয়ে ব্রিজের কন্ট্রাকশনের কাজ শুরু হবে। ঋণের শর্ত অনুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়ার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেতু নির্মাণের কাজ করবেন। সমীক্ষা প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মূল সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৭০০ মিটার আর এতে নেভিগেশন হাইট বা উচ্চত হচ্ছে ১২ দশমিক ২ মিটার। এ জন্য দুই প্রান্তে সংযোগ স্থাপন করা হচ্ছে (স্বাব) ২ দশমিক ৫০ মিটার করে। সমীক্ষা অনুযায়ী নতুন সেতুর প্রস্থ হচ্ছে ৭০ ফুট। এর মধ্যে ৫০ ফুটে হবে ডবল গেজ ও (এমজি ও বিজি) ডাবল ট্র্যাক। ২০ ফুটের মধ্যে দুই লেনের সড়ক পথ তৈরি করা হবে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।