দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক–ইওলের সামরিক আইন জারির চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ঘটনাটি তদন্তের আওতায় তার দপ্তরে গতকাল বুধবার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সে সময় ইউন দপ্তরে ছিলেন না। ওদিকে সামরিক আইন জারির ব্যর্থ চেষ্টার দায় মাথা পেতে নেওয়া দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং–হিউন আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। খবর বিডিনিউজের।
গত ৩ ডিসেম্বর সবাইকে অবাক করে রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে সমূলে উৎপাটনের কথা বলে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ইউন। চাপের মুখে প্রায় ছয় ঘণ্টা পর তিনি এ ঘোষণা থেকে সরে এলেও দক্ষিণ কোরিয়া কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটে পড়ে।
ইউনকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পার্লামেন্টে অভিশংসনের উদ্যোগ নেন বিরোধীরা। তবে ক্ষমতাসীন দল সেই উদ্যোগ ভেস্তে দেয়। রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে প্রেসিডেন্টের অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পদত্যাগ করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং–হিউন। তিনি প্রেসিডেন্টকে সামরিক আইন জারির পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ছিল। এ দায় মাথায় নিয়েই পদত্যাগের ঘোষণা দেন কিম ইয়ং–হিউন। গত রোববার তাকে তদন্তের জন্য আটক করা হয়েছিল। পরে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিচার মন্ত্রণালয়ের সংশোধনমূলক সংস্থার প্রধান শিন ইয়ং–হে আইনপ্রণেতাদের জানান, মঙ্গলবার রাতে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং–হিউন আটক কেন্দ্রেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তখন কর্তৃপক্ষ তাকে ওই অবস্থা থেকে উদ্ধার করে।
হিউনের অবস্থা এখন স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন শিন ইয়ং–হে। তাকে এখন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং বর্তমানে তার প্রাণহানির ঝুঁকি নেই বলেও জানান তিনি। দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেওয়া প্রেসিডেন্ট ইউনের সামরিক আইন জারির পদক্ষেপে ভূমিকা রাখার জন্য তদন্তের মুখোমুখি হওয়া শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে কিম ইয়ং–হিউন অন্যতম। তার পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল পুলিশ সংস্থা ও সিউল মেট্রোপলিটন পুলিশ সংস্থার প্রধানরাও আটক হয়েছেন। সামরিক আইন জারির বিষয়ে তদন্তে আরও এগিয়েই কোরিয়ার পুলিশ গতকাল সকালে ইউনের দপ্তরে তল্লাশি অভিযান চালায়। বিদেশ ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ইউনের বিরুদ্ধে।
ইউন এবং তার সামরিক আইনের আদেশ জারির সঙ্গে জড়িত অন্যদের বিদ্রোহ করার অভিপ্রায় ছিল কিনা, সেদিকটি তদন্তে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।