দইজ্জ্যার তলে চলে গাড়ি

মিতা পোদ্দার | রবিবার , ৫ নভেম্বর, ২০২৩ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গবন্ধু টানেল এর উদ্বোধন বাংলাদেশের জন্য আরেকটি একটি মাইলফলক। এই টানেলের মাধ্যমে কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ের মানুষের মধ্যে যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হল। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৮শে অক্টোবর নতুন এই মেগা প্রকল্পের উদ্ভোধন করেন। এই সুড়ঙ্গটি চট্টগ্রাম শহরের বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির পাশ দিয়ে শুরু হয়ে নদীর দক্ষিণ পাড়ের আনোয়ারা প্রান্তের চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড এবং কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড কারখানার মাঝামাঝি স্থান দিয়ে গিয়ে নদীর অপর প্রান্তে পৌঁছে নদীর দুই তীরের অঞ্চলকে যুক্ত করেছে।এই সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে ঢাকাচট্টগ্রামকঙবাজার মহাসড়ক যুক্ত হয়। বঙ্গবন্ধু টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিলোমিটার। এই সুড়ঙ্গটি বাংলাদেশের প্রথম সুড়ঙ্গ পথ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় নদী তলদেশের প্রথম ও দীর্ঘতম সড়ক সুড়ঙ্গপথ। জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামবাসীকে যেই উপহারটি দিয়েছিলেন সেই উপহার হলো ‘দইজ্যার তলে দিয়ে গাড়ি চলে’। দইজ্যার তলে মানে টানেল। আমি তো ভেবেই অবাক। দক্ষিণ এশিয়ার এ এক অভিনব সৃষ্টি যা শুধুমাত্র বঙ্গকন্যার মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। তিনি এই টানেল নিয়ে সুন্দর এক অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেছিলেন যা শুধু চট্টগ্রাম নয়, সারা দেশ, এমনকি আঞ্চলিক সমৃদ্ধির হাব হবে এই টানেল। তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বারবার বলেন, দইজ্যার তলে চলে গাড়ি, মাইয়া যাবে বাপের বাড়ি। কালের সাক্ষী রেখে যাবে এই টানেল। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে দুই টিউববিশিষ্ট বহু লেনের টানেল। যার নামকরণ দেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল।

চট্টগ্রাম হলো বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর এবং বৃহত্তম বাণিজ্যিক নগরী। কর্ণফুলী নদীর মুখে অবস্থিত চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমেই অধিকাংশ দেশের আমদানি এবং রপ্তানি কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। দীর্ঘ এঙপ্রেসওয়ে টানেলটি উন্মোচন করার পর বন্দর নগরী চট্রগ্রাম দেশের ঐতিহাসিক যোগাযোগের একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিঃ মিঃ।

বর্তমান কোরিয়ান ইপিজেডের সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের যাতায়াতের তুলনামূলক সুবিধাজনক রুট হবে এই টানেল। এছাড়া ঢাকাকঙবাজার রুটে “৫০ কিলোমিটারের মতো দূরত্ব কমবে এবং সময় বাঁচবে এক ঘণ্টার মতো”। এই টানেল নির্মাণে কাজ করেছে চীনের চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি।এই টানেলের টোল ভাড়া প্রকাশ করা হয়েছে যা গাড়িভেদে ২০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। সেদিন আর দূরে নয়, আমাদের চট্টগ্রামও হবে চীনের সাংসাইয়ের আদলে ওয়ান সিটি টু টাউন। তাই জোরকন্ঠে বলবোশেখ হাসিনা সরকার, বারবার দরকার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমনের দূরত্ব
পরবর্তী নিবন্ধদেশ হতে দেশান্তরে