ইংরেজি বর্ষবরণ ও থার্টি ফার্স্ট নাইটকে ঘিরে এখন লক্ষাধিক পর্যটক ভিড় করছে দেশের প্রধান অবকাশযাপন কেন্দ্র কক্সবাজারে। এ উপলক্ষে সমুদ্র সৈকত বা উন্মুক্তস্থানে কোন অনুষ্ঠান পালনের উপর প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে বন্ধুবান্ধব নিয়ে হোটেল কক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছেন। এছাড়া কক্সবাজার উপকূলবর্তী বঙ্গোপসাগরে ভাসমান একটি প্রমোদ তরীতে আয়োজন করা হয়েছে পশ্চিমা ধাঁচের ডিজে প্রোগ্রামসহ রাতব্যাপী নানা অনুষ্ঠানমালার। আর এসব অনুষ্ঠানে অংশ নিতে কক্সবাজার শহর, সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, ইনানী ও হিমছড়িতে জড়ো হয়েছেন হাজার হাজার পর্যটক। থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপনকে কেন্দ্র করে আজ কক্সবাজারে দেড় লাখেরও বেশি পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পর্যটকদের ভীড়ে শহরের চার শতাধিক আবাসিক হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউসে আগামী পহেলা জানুয়ারি পর্যন্ত সকল কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। গত কয়েকদিন ধরেই কক্সবাজারের হোটেল-মোটেলগুলোতে চলছে হাউসফুল অবস্থা।
থার্টি ফাস্ট নাইটকে ঘিরে আতশবাজি, পটকা ফুটানোসহ কোন উন্মুক্তস্থানে অনুষ্ঠান উদযাপনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা পুলিশ। সেসাথে রাত ১২টার পর উচ্চস্বরে মাইক কিংবা সাউন্ড সিস্টেম বাজানোর উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পুলিশ। এ উপলক্ষে গতকাল বুধবার থেকেই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যা কাল পহেলা জানুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
পুলিশি নিষেধাজ্ঞার পরও উৎসুক মানুষের বাঁধভাঙা জোয়ার দেশের পর্যটন রাজধানী নামে পরিচিত কক্সবাজারে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসা নানা বর্ণের ও বয়সের এসব মানুষের ভীড়ে কক্সবাজারে চলছে এক মহা মিলনমেলা। আর এ মেলায় চোখে পড়ার মতোই আধিক্য তরুণ-তরুণীদের। এদের মধ্যে ঢাকা থেকে আসা ফরিদ কবির ও ফারিয়াও রয়েছেন। কক্সবাজারে বেড়ানোর অনুভূতি অসাধারণ, বিশেষ করে পূর্ণিমার রাত হওয়ায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তারা কক্সবাজারকে উপভোগের সুযোগ পাচ্ছেন বলে জানান।
থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন করতে আরো হাজার হাজার মানুষের মতোই কক্সবাজারে এসেছেন সিলেটের বাবু, রাজশাহীর ডলার, ফরিদপুরের সাজু ও খুলনার মর্জিনাসহ তাদের একদল বন্ধু-বান্ধব। আজ বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় বঙ্গোপসাগরে ভাসমান জাহাজে জোৎস্নাস্নিগ্ধ রাতে নতুন বছরকে বরণ করবেন বলে জানান।
কক্সবাজারের হোটেল মালিকরা জানান, কক্সবাজারের হোটেলে প্রায় দেড় লাখ পর্যটকের রাত যাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। দুই ঈদ ছাড়াও ইংরেজি নববর্ষকে ঘিরে কক্সবাজারে সবচেয়ে বেশি পর্যটকের ভীড় জমে। এসময় হোটেলে কক্ষ বরাদ্দ পাওয়া হয় কঠিন। একই অবস্থা চলছে এবারও।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, উচ্ছৃক্সখলতা ও করোনা সংকটের আশংকায় উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠানের পর পুলিশের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ঘরোয়া অনুষ্ঠানের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই পর্যটকদের উৎসাহেও ভাটা নেই।
একই কথা জানান কক্সবাজারের ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন টুয়াক বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান। থার্টি ফার্স্ট নাইটকে ঘিরে আইন শৃক্সখলা রক্ষায় কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ সক্রিয় রয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।