ফটিকছড়িতে তিন কিশোরকে চোর সন্দেহে বেঁধে পেটানোর পর রিহান উদ্দিন মাহিন (১৫) নামে একজনের মৃত্যুর ঘটনায় নিহতের মা খাদিজা বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এরই মধ্যে ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানান ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আহমদ।
এদিকে ঘটনার পরদিন গতকাল শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহত মাহিনের মা–বাবার সাথে কথা বলেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু। এসময় তিনি বলেন, আমরা ঘটনাস্থল দেখেছি। এরই মধ্যে এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদেরও ধরা হবে। ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ আন্তরিক সহযোগিতা করা হবে।
ওসি নুর আহমদ বলেন, মাহিন ও তার দুই বন্ধু দুইদিন আগে কঙবাজার গিয়েছিল। শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে তারা গ্রামে ফিরে আসে।
ঘরে যাওয়ার আগে ভোর ৫টার দিকে তারা চেইঙ্গার ব্রিজের সামনে গেলে ‘চোর চোর’ বলে প্রোপাগাণ্ডা ছড়িয়ে তাদের ধাওয়া দেয় স্থানীয় কয়েকজন। তিন কিশোর পালিয়ে প্রথমে একটি ভবনে আশ্রয় নেয়। তাদের সেখান থেকে বের করে বেঁধে মারধর করা হয়। এতে মাহিন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তার দুই বন্ধু চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মামলার বাদী ও নিহত মাহিনের মা খাদিজা গতকাল বিলাপ করতে করতে বলছিলেন, আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। অনেক দুঃখ–কষ্টে তাদের বড় করেছি। গত মঙ্গলবার মাহিন তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে যায়। এর পরদিন বন্ধুদের সাথে কঙবাজার বেড়াতে যায়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতে ফেরার সময় দেরি হয়ে যায়। তার কাছে টাকা ছিল না তাই বাড়িতে এসে সে সিএনজি দাঁড় করিয়ে আমার কাছে টাকা নিতে আসছিল। আসার পথেই চোর বলে আমার ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ছেলে মৃত্যুর সময় একটু পানি খেতে চেয়েছিল। আমি পানি খাওয়াতে এগিয়ে গেলে তাদের বাধার মুখে তাও পারিনি। ছেলের পিতা অন্তত প্রাণটা রক্ষা করতে গিয়ে বেদম মার খেয়েছে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে সে এখন পাগলের মত এদিকওদিক ছোটাছুটি করছে। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের দৈনিক আজাদীকে বলেন, এ ধরনের ঘটনা আমার এলাকায় এ প্রথম ঘটেছে। ঘটনায় জড়িত সবার বিচার হোক।