থাইল্যান্ডের দশম রাজা ভাজিরালংকরণএর জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানী ব্যাংককের রাচেদমনেন এভিনিউ নানা রঙের ফুল ও গাছে সুসজ্জিত এবং রাজকীয় উদ্যান নামে পরিচিত (সানাম লুয়াং) স্থানে ২১ বার তোপধ্বনি দিয়ে রাজাকে সম্মান প্রদর্শন করা হয় আজ বুধবার (১৮ জুলাই)।
ব্যাংককের সকল বিদেশী রাষ্ট্রদূত ও হাই কমিশন থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে রাজাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা জানানো হয়।
থাই রাজার ৬৯ তম জন্মদিন উপলক্ষে দুই লাখেরও বেশি বন্দীকে রাজকীয় ক্ষমা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৫ হাজার বন্দীকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হবে।
গতকাল মঙ্গলবার সংশোধন অধিদফতরের মহাপরিচালক আরিয়ুত সিনথোফেন বলেন, “বুধবার এই আদেশ কার্যকর হওয়ার ১২০ দিনের মধ্যে এই বন্দীদের ২০২০ রাজকীয় ক্ষমা অধ্যাদেশের অধীনে সাজা কমিয়ে দেওয়া হবে।”
তিনি বলেন, “যে সকল বন্দীকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হবে তারা এখন সারাদেশের ১৪৩টি কারাগারে এবং নতুন রাজকীয় ক্ষমা আদেশানুসারে মুক্তি পাওয়ার যোগ্য। তাদের মধ্যে একজন হলেন সুপরিচিত সংবাদ পাঠক সোরায়ুথ সুথাসানাচিন্দা
২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিজ্ঞাপনের রাজস্ব আত্মসাতের মামলায় আট বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এই সংবাদকর্মী মোট দুই বছর চার মাস সময় কাটিয়েছিলেন বলে জানান আরিয়ুত।
আরিয়ুত বলেন, “ইউনাইটেড ফ্রন্ট ফর ডেমোক্রেসি (ইউএফডি) চেয়ারম্যান যাতুপর্ন প্রম্পান আগামী মাসে প্যারোলে মুক্তি পাবেন। যাতুপর্ন নতুন রাজকীয় ক্ষমার আওতায় প্যারল পাওয়ার যোগ্য কারণ তার কারাগারে থাকার জন্য এক বছরেরও কম সময় রয়েছে।”
ট্যুরিজম অথরিটি অভ থাইল্যান্ড (টিএটি)-এর সাবেক গভর্নর যুথামস সিরিওয়ান যাকে ব্যাংকক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজনের ঘুষের দায়ে ৫০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছিল, তিনিও এই শাস্তি হ্রাস পেয়েছিলেন ১৭ বছর। যুথামাসের মেয়ে জিত্তিসোফা সিরিওয়ান যিনি একই চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজনে ঘুষ কেলেঙ্কারির মামলায় ৪০ বছরের কারাদণ্ডের মুখোমুখি হয়েছেন তার সাজা কমিয়ে ২২ বছর দুই মাস করা হয় বলে জানান আরিয়ুত।
প্রাক্তন বাণিজ্যমন্ত্রী বুনসং তেরিয়াপিরম-এর ৪৮ বছরের সাজা কমিয়ে ১৬ বছর এবং তার সাবেক সহকারী পুম সারাপোল-এর ৩৮ বছরের সাজা কমিয়ে ১৩ বছর করা হয়েছে যারা নির্বাসিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা প্রশাসনের চাল-কেলেঙ্কারি প্রকল্পের সাথে জড়িত মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।
সংশোধন অধিদফতরের মহাপরিচালক আরিয়ুত সিনথোফেন আরো বলেন, “তাছাড়াও কিছু অসুস্থ প্রবীণ কয়েদী যারা ৬০ বা তার বেশি বয়সী, পক্ষাঘাত, স্মৃতিভ্রংশ, মস্তিষ্কে ব্যাধি, দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধী পালমোনারি রোগ, অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী লিভার সমস্যায় আক্রান্ত তাদের রাজকীয় ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য হওয়ার সুযোগ দিতে নতুন রাজকীয় আদেশে কিছু নতুন বিধি যুক্ত করা হয়েছে।”
যেসব কয়েদি পুনরায় অপরাধের জন্য কারাগারে রয়েছে, যারা সাজা প্রদানের সময় ভালো আচরণ করেনি এবং মাদক মামলায় দণ্ডিত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তারা রাজকীয় ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।