কুমিল্লার মুরাদনগরে মাদক ব্যবসার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে মা ও ছেলেমেয়েকে পিটিয়ে হত্যার পর জমজমাট কড়ইবাড়ী গ্রাম এখন অনেকটাই থমথমে; গ্রেপ্তার আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে পুরুষরা এলাকা ছেড়ে গেছেন। ঘটনার প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। কেউ আটক নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে তিনজনের মরদেহ সন্ধ্যায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে দাফনের উদ্দেশে কড়ইবাড়ি নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। খবর বিডিনিউজের।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কড়ইবাড়ী গ্রামে একটি বাড়িতে মাদক কারবার ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে কিছু লোক হামলা চালায়। হামলায় কড়ইবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫), তার ছেলে রাসেল (২৮) ও মেয়ে জোনাকি (২২) ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত হয়েছেন রুবির মেয়ে রুমি আক্তার (৩০)। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরিবারের দাবি, একটি মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এর সূত্রপাত এবং বুধবার সন্ধ্যায় পরিকল্পনা করে বৃহস্পতিবার সকালে হামলা চালিয়ে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে। কেউ কেউ অবশ্য বলেছেন, পরিবারটির বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় ধরেই মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলাও রয়েছে। তারা এলাকায় বেশ প্রভাবশালী। এ থেকেও এ ঘটনা ঘটতে পারে।
মুরাদনগরের কড়ইবাড়ী একটি বাসস্ট্যান্ড। রুবির বাড়িটি কড়ইবাড়ী বাসস্ট্যান্ডের কেন্দ্রস্থলে। এর আশপাশে বেশ কিছু দোকানপাটও রয়েছে। এটি মুরাদনগর–নবীনগর আঞ্চলিক সড়কের মধ্যে পড়েছে। এই সড়ক ধরেই কুমিল্লা থেকে মানুষজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাতায়াত করেন। ফলে জায়গাটি সবসময় লোকজনের আনাগোনায় জমজমাট থাকে।
গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির আশপাশে তেমন কোনো মানুষজন নেই। বাড়ির ভেতরে ও সামনে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য পাহারা দিচ্ছেন। আগের দিন বৃহস্পতিবার হত্যাকাণ্ড নিয়ে উৎসুক জনতা গণমাধ্যমকে বক্তব্য দিলেও গতকাল কাউকে কথা বলার জন্য পাওয়া যায়নি। কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশেষ করে পুরুষ মানুষদের বেশিরভাগই এলাকা ছাড়া হয়েছেন। নারীরা বলছেন, ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দোকান–পাট বন্ধ রয়েছে, গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেকেই এলাকা ছাড়া হয়েছেন।