তোমাদের বাড়িগুলো!

শাহনাজ সিঁথি | শনিবার , ১৫ নভেম্বর, ২০২৫ at ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ

বেশ কদিন হলো সারি সারি বাড়িগুলো বেশ ভাবাচ্ছে।

মেয়ে হয়ে জন্মেছি বলে প্রথাগত পথে পৈতৃক ভিটার

কোনও হদিস আমার রাখার অধিকার নেই।

যদি ধরে নেই সেই ভিটার প্রথম নারী ও পুরুষ

প্রোথিত করেছিলো আমার জন্ম;

তবুও, আমি নারী বলে সেখানে অর্বাচীন বলে স্বতঃসিদ্ধ।

আমার মাতৃগৃহে আমার জন্ম হতে পারে;

কিন্তু সেখানে আমি অনাহূত।

রক্ত প্রবাহিত হলেও শেকড় গড়ে ওঠেনা মাতুলালয়ে।

নানানানী, আর মামাদের জীবদ্দশায় আমার যে কদর

কালের পরিক্রমায় তা ফিকে হতে থাকে।

আমরা অনেকটাই তখন কালেভদ্রে আপ্যায়িত অতিথি।

অথচ কী যত্নে এই বাড়িগুলোর মায়াময় ছবি আঁকড়ে আমি

বেঁচে থাকি স্মৃতির আকর বুকের গহীনে লুকিয়ে।

উত্তরাধিকার হওয়া কেবল পুত্রের জন্মগত অধিকার।

শৈশবকৈশোরের আমাদের বাড়ি তখন ‘বাবার কিংবা

মায়ের বাড়ি‘- আপত্তি নেই কোনও; অভিমান জমে কেবল!

বাবামায়ের স্নেহ একসময় মিলিয়ে যায় মহাশূন্যে

অপরিচিত হতে হতে বাড়িটা একসময়

চোখ থেকে মনের আড়াল অব্দি গড়ায়!

আলোগুলো নিভতে থাকে ধীরে ধীরে।

নারী আমি স্থানান্তরিত হই শ্বশুরবাড়ি নামক মরীচিকায়

সেখানেও পরিচয় বাইরের মানুষ!’

ঘরে আর ফেরা হয়নাসবই কেবল বাড়ি!

ধীরে ধীরে ঘর আর বাড়ির তফাৎ বুঝতে শিখি।

সেই বাড়িটাও আজ পরিত্যক্ত।

যতদিন না তোমাদের কন্যাজায়াজননী

উত্তরাধিকার, সঙ্গী আর সম্মানিত হবে

তোমাদের বাড়িগুলো এমন অন্ধকারে

ডুবতে ডুবতে একদিন চিরতরে হারিয়ে যাবে!

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে লেভেল-এ ক্রিকেট কোচিং কোর্স আজ শুরু
পরবর্তী নিবন্ধশ্যামল মিত্র : বাংলার সংগীতাকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র