নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে তিন বছর পর বান্দরবানের রুমা উপজেলায় দেশের অন্যতম পাহাড়চূড়া কেওক্রাডং পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য খুলে দেয়া হলো। গতকাল বুধবার থেকে শর্তসাপেক্ষে বান্দরবানের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি স্বাক্ষরে জারিকৃত গণবিজ্ঞপ্তিতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, ২০২২ সালের অক্টোবরে পাহাড়ে সশস্ত্র সংগঠন কুকি–চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট–কেএনএফ এবং নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শ্বারকীয়ার বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অভিযানে নিরাপত্তা বিবেচনায় জেলার রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি ও আলীকদম চারটি উপজেলায় দফায় দফায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রশাসন। তবে পরবর্তীতে পরিস্থিতি বিবেচনায় ধাপে ধাপে সবকটি উপজেলা থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও কেওক্রাডং পাহাড় চূড়াসহ আশপাশের দর্শনীয় স্থান এবং থানচি উপজেলার নাফাখুমসহ আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়। এদিকে তিন বছরের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এ বছরের ১ অক্টোবর থেকে কেওক্রাডং পাহাড় চূড়া ভ্রমণের জন্য খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, পর্যটন সংশ্লিষ্টদের অনুরোধে এবং আইনশৃঙ্খলার সার্বিক পরিস্থিতি উন্নতির কথা বিবেচনায় নিয়ে ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের জন্য কেওক্রাডং পাহাড় চূড়া পর্যটন স্পটটি খুলে দেয়া হলো ১ অক্টোবর থেকে। তবে মানতে হবে শর্ত বা বিধিনিষেধ। আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে বিদ্যমান নিয়মকানুন মেনে পর্যটকেরা সেখানে ভ্রমণ করতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, কেওক্রাডং পাহাড় চূড়া ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে ২৯ সেপ্টেম্বর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি। ২০২২ সালের অক্টোবরে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
রুমার স্থানীয় ব্যবসায়ী পাইলিয়াম বম বলেন, কেওক্রাডং পাহাড় চূড়া পর্যন্ত ভ্রমণকারীদের খুলে দেয়া হয়েছে। প্রথম দিনেই অনেকগুলো বাইকার গ্রুপ সেনাবাহিনীর তৈরি সড়কপথে কেওক্রাডং ভ্রমণে গেছেন। দীর্ঘদিন পর কেওক্রাডং পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে পর্যটকদের উপস্থিতিতে স্থানীয়দের উৎপাদিত ফলমূল বেচাবিক্রি বেড়েছে। তাঁতের পোশাকও কিনেছেন অনেকে। কেওক্রাডং খুলে দেয়া হলেও পাহাড়ের দূরদূরান্তের ঝরনা, রাইক্ষ্যংপুকুর লেকসহ পাহাড়ের দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণে বিধিনিষেধ রয়ে গেছে। শতভাগ পর্যটন খুলে দেবার দাবি জানাচ্ছি।
জেলা হোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বলেন, শারদীয় উৎসবের ছুটি এবং কেওক্রাডং পাহাড় চূড়া ভ্রমণ উন্মুক্ত করে দেয়ায় পর্যটকের ভিড় দেখা যাচ্ছে জেলায়। রুমা উপজেলায় পর্যটকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে পর্যটকদের জন্য দর্শনীয় স্থানগুলোও খুলে দেবার দাবি জানান তিনি