পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটকদের ভ্রমণে বিরত থাকার যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তা দ্রুত তুলে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। ঢাকায় ফিরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে আলোচনা করে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানান তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সমপ্রীতি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, সমপ্রতি সাজেক ভ্রমণে গিয়ে প্রচুর পর্যটক আটকে পড়ে। সারাদেশ থেকে যাওয়া পর্যটকেরা সেখানে আটকে পড়ায় সরকার খুব বিব্রত অবস্থায় পড়েছে। সরকারের ইমেজ ক্ষুন্ন হয়েছে। আমরা বিব্রত অবস্থায় পড়তে চাই না। সরকার সকল দিক বিবেচনা করে পর্যটন খুলে দিবে। এ ছাড়া দীঘিনালায় ১৯ সেপ্টেম্বর সামপ্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেফতার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপদেষ্টা। সংঘাত, হামলার সাথে যারা জড়িত তাদের বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এসময় আইনের নিজের হাতে তুলে না নেওয়ারও অনুরোধ জানান।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ বলেন, এখানে যারা সাধারণ পাহাড়ি–বাঙালি আছে তাদের মধ্যে কোন বিরোধ নাই। যারা এখানে সংঘাত করছে তারা বাইরে থেকে আসে নাই যারাই অপরাধী তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে উপস্থিত সবাই চাঁদাবাজির শিকার। এখানে যারা আছেন প্রত্যেককে চাঁদা দিতে হচ্ছে। আমরা কেন দিচ্ছি? মুরগী বিক্রি হলে চাঁদা দিতে, কলার ছড়া বিক্রি করলে চাঁদা দিতে হবে। এটা কখনো হতে পারে না। পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠনগুলোকে ইঙ্গিত করে সবাইকে ওপেন ফিল্ডে এসে গণতান্ত্রিক ধারায় রাজনীতির করার অনুরোধ করেন।
সম্প্রীতি সমাবেশে সমপ্রতি দীঘিনালার লারমা স্কয়ারের সহিংসতার ঘটনায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্থদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা, ভাঙচুরে শিকার হওয়াদের ২০ হাজার টাকা করে এবং নিহত একজনকে ১ লাখ টাকা সহায়তা দেয়া হয়। এ সময় ক্ষতিগ্রস্থদের খাদ্যশস্য সহায়তা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের পাশাপাশি বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল, দীঘিনালা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুনুর রশীদ, দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ধর্মজ্যোতি চাকমা, সাবেক চেয়ারম্যান নব কমল চাকমা, উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।