বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে এক মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে নড়াইলের এক আদালত। জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম-২ আদালতের বিচারক আমাতুল মোর্শেদা গতকাল বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সঞ্জিব কুমার বসু জানান, নড়াইলের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহাজান বিশ্বাসের করা এ মামলায় তারেককে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই টাকা না দিলে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। এ নিয়ে মোট চারটি মামলায় সাজার রায় হল খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। খবর বিডিনিউজের।
অর্থ পাচারের একটি মামলায় সাত বছর, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং একুশে আগস্টের গ্রেনেড মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে আছেন তিনি। সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে গ্রেপ্তার হওয়ার এক বছর বাদে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি নিয়ে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন তারেক, তারপর থেকে স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে সেখানেই থাকছেন তিনি।
বিদেশে থেকেই বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি, মা খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়ার পর থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব তিনিই পালন করছেন। দণ্ড নিয়ে পলাতক তারেককে ফেরাতে বিভিন্ন সময়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা, তবে তাতে এখনও সফল হয়নি। বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমে পলাতক তারেকের বক্তব্য-বিবৃতি প্রচারের ওপর হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞা আছে।
২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপির এক অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করেন তারেক, যে খবর সংবাদমাধ্যমেও আসে। এরপর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেশের জেলায় জেলায় মানহানী ও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার হিড়িক পড়ে যায়। ওই বছরের ২৪ ডিসেম্বর নড়াইলের হাকিম আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন কালিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রাক্তন কমান্ডার শাহাজাহান বিশ্বাস। বিচারক সে সময় মামলা আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। পরে তারেককে পলাতক দেখিয়ে মামলার বিচার শুরু হয়। শুনানিতে তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তারেককে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করলেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সঞ্জিব কুমার বসু জানান।