মেডিকেল ও ফরেনসিক বিভাগের অসহযোগিতা ও হয়রানির কারণে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে বিলম্ব হওয়ার কথা জানিয়েছেন নগরীর ১৬ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও তদন্ত সংস্থার প্রতিনিধিরা। গতকাল পুলিশ–ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্সে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলমের কাছে এ অভিযোগ করা হয়।
গতকাল বিকালে চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের উদ্যোগে আদালতের কনফারেন্স কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও তদন্ত সংস্থার প্রতিনিধিরা বলেন, মেডিকেল সনদ, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও ভিসেরা রিপোর্ট প্রাপ্তিতে বিলম্ব এবং এক্ষেত্রে মেডিকেল ও ফরেনসিক বিভাগের সংশ্লিষ্টরা
অসহযোগিতা ও হয়রানি করেন। এর ফলে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা সম্ভব হয় না। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা, বিচারপ্রার্থী মানুষ ও আসামিরা। আদালতসূত্র জানায়, পুলিশ ও তদন্ত সংস্থাকে অসহযোগিতা ও হয়রানির অভিযোগের পর মেডিকেল ও ফরেনসিক বিভাগের প্রতি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। পাশাপাশি যথাসময়ে মেডিকেল সনদ, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও ভিসেরা রিপোর্ট প্রদানের জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনাও দেন। সভার শুরুতে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলম বিগত সভার সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরার পাশাপাশি বিচারকাজ ও মামলা নিষ্পত্তিতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাসমূহ এবং এর কার্যকর সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন। বিচারাধীন মামলাসমূহের সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বিভিন্ন ধরনের দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। তাছাড়া তদন্তে ভুল ত্রুটি পরিহার করে দ্রুততম সময়ে রিপোর্ট দাখিলের জন্যও তিনি নির্দেশ দেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলম। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা আফরোজ চৌধুরী, সিটি কর্পোরেশনের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা মহাজনসহ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসিতে কর্মরত ম্যাজিস্ট্রেটরা। জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী। মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এডিসি (প্রসিকিউশন) আরাফাতুল ইসলামসহ নগরীর সকল থানার ওসিরা। কনফারেন্সে আরও উপস্থিত ছিলেন পিবিআই, সিআইডি, ডিবি, টুরিস্ট পুলিশ, শিল্পাঞ্চল পুলিশ, কারা প্রশাসন, স্বাস্থ্য ও ফরেনসিক মেডিসিন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী তার বক্তব্যে পুরাতন মামলার তদন্ত সমাপ্তি নিয়ে মতামত ব্যক্ত করেন এবং আদালত হাজতে আনা আসামিদের দুপুরের খাবারের সমস্যার সমাধান হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান। অন্যান্য বক্তারা তাদের বক্তব্যে মামলা দায়ের, তদন্ত, সমন, ওয়ারেন্ট, ডব্লিউপিএন্ডএ, সাক্ষী উপস্থাপন, মালখানা ইত্যাদিতে বিদ্যমান সমস্যা ও সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন।