মহামারী কোভিড ১৯-এর করাল গ্রাসে গোটা দুনিয়াই বিপর্যস্ত, যেনো থমকে আছে সমস্ত কিছুই। একে মোকাবেলায় দেশে দেশে নেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে নানা কর্মসূচি। বাংলাদেশেও এর থাবা পড়েছে ২০২০-এর গোড়ার দিকে। সেসময়ই এদেশের মানুষ প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হয় লকডাউনের। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যা কার্যকরিও বটে।
তথ্যচিত্র ‘লিমিট’ সেই লকডাউন বা অবরুদ্ধ সময়েরই দৃশ্যমাধ্যমের বয়ান। একটি দারুণ জাগ্রত শহর আর তার সদা স্পন্দমান হৃদয় কীকরে স্থিরবৎ হয়ে পড়ে, কী করে এর জনজীবন স্থবিরতা আর আশংকার দোলাচলে মুহ্যমান থাকে তারই দলিল যেনো ‘লিমিট’। এই তথ্যচিত্রটি পরিচালনা করেছেন নির্মাতা দেবাশীষ মজুমদার, যা সম্প্রতি ‘এসডিজি ইন অ্যাকশন ফিল্ম ফেস্টিভাল’-এ পুরষ্কৃত হয়েছে।
জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ভিত্তিক বিভাগের সমন্বিত কার্যক্রমের আওতায় ‘এসডিজি ইন অ্যাকশন ফিল্ম ফেস্টিভাল’ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের একটি প্রতিযোগিতা যা বিশ্বজুড়ে জনগণ এবং এর সঙ্গে যুক্ত সংস্থাসমূহ জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহের জন্য কীভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে তা তুলে ধরে। নিউইয়র্কের ইউএন সদর দফতরে প্রতি জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া টেকসই বিকাশের বিষয়ে উচ্চ-স্তরের রাজনৈতিক ফোরামের উদ্যোগে ২০১৮ সালে এই চলচ্চিত্র উৎসবটি চালু হয়।
প্রতিযোগিতাটিতে বিশ্বজুড়ে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বিশ মিনিট পর্যন্ত দৈর্ঘ’র অ্যানিমেটেড বা লাইভ-অ্যাকশন চলচ্চিত্র জমা দেওয়ার সুযোগ ঘটে। এতে তিনটি বিভাগ থেকে চলচ্চিত্র জমা নেওয়া হয়।
যেমন: কোভিড-১৯-এ ক্ষতিগ্রস্থ দেশ-জনগণ-ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির পুণর্নির্মাণ, আমাদের এই গ্রহকে রক্ষা করা এবং বৈশ্বিক লিঙ্গ সমতার অগ্রগতি।
এ-বছর ‘এসডিজি ইন অ্যাকশন ফিল্ম ফেস্টিভাল’-এ বাংলাদেশের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘লিমিট’ বিভাগের প্রথমোক্ত ‘‘কোভিড-১৯-এ ক্ষতিগ্রস্থ দেশ-জনগণ-ব্যবস্থাপনা’’ ক্যাটাগরিতে পুরষ্কার জিতেছে। ‘লিমিট; পরিচালনা করেছেন দেবাশীষ মজুমদার, তাঁর দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন শিহাব গাহিন (ডিওপি), জাকির হোসেন (আর্ট ডাইরেকশন), তানিম ইবনে ইউসুফ (প্রকল্প সমন্বয়ক) এবং ফেসলিয়ান স্টুডিও (ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক)।
চলচ্চিত্রটির প্রযোজক হিসেবে আছে ‘চিত্রভাষা’। ইউএন ডেসা অ্যাকশন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ২০২১ এসডিজির আনুষ্ঠানিক নির্বাচনের যে অন্য যে পাঁচটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পুরষ্কৃত হয়েছে তা হলো, স্পেনের চলচ্চিত্র আলবের্তো প্লা মনফোর পরিচালিত ‘আশা : স্টোরিজ অব ল্যাপরোসি এন্ড হোপ’, মেক্সিকোর চলচ্চিত্র হোসে আলভারেজ গার্সিয়া পরিচালিত ‘অরোরা’, যুক্তরাজ্যের চলচ্চিত্র এ্যন ম্যারি এবং এলি সাটল পরিচালিত ‘ইনভিজিবল হেল্পার’, পর্তুগালের চলচ্চিত্র সান্দ্রা দুয়ার্তে কারদোসো এবং তিয়াগো লুরি পরিচালিত ‘সদেদ’ এবং উগান্ডার চলচ্চিত্র নাজিন্দা রুথ পরিচালিত ‘টু সারভাইব’।
বিশ্বজুড়ে লোকদের ভার্চুয়াল স্ক্রিনিংয়ে যোগ দিতে এবং এই সপ্তাহে “পিপল চয়েস” বিজয়ীর পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য আয়োজকদের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হচ্ছে! যে কেউ এই নিম্নলিখিত লিঙ্কের মাধ্যমে পছন্দের চলচ্চিত্রটিকে ভোট দিতে পারছেন:
bit.ly/SDGFilmFest এবং এতে ভোটগ্রহণ চলবে ১১ই জুলাই রাত ৮টা পর্যন্ত।
আগামী ১২ই জুলাই অন্যান্য বিজয়ীদের সাথে পিপলস চয়েস এওয়ার্ড বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ এবং সকল প্রতিনিধি প্রতিবছরের ন্যায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহের (এসডিজি) অনুসরণ ও পর্যালোচনার জন্য জমায়েত হযতে চলেছেন। সেই অনুষ্ঠানটি ইউএন ওয়েবটিভিতে (webtv.un.org) এবং ইউরোপীয় এবং এশিয়া-প্যাসিফিক ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন নেটওয়ার্কগুলিতে সরাসরি প্রচারিত হবে। উল্লেখ্য যে, ১২ই জুলাই ২০২১ এর এই পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন অ্যান্টোনিও ব্যান্ডেরাস, জর্জ ক্লুনি, গ্রেটা থানবার্গ, জেমস ক্যামেরন, লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, পেদ্রো আলমাদোভর এবং কোয়ান্টিন তারান্টিনো সহ অনেক তারকা।