তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে স্থায়ী সমাধান চান প্রধান বিচারপতি

৭ বিচারকের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে শুনানি

| বৃহস্পতিবার , ২৮ আগস্ট, ২০২৫ at ৪:৫৫ পূর্বাহ্ণ

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিয়ে সাময়িক সমাধান দিতে চায় না আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগ নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কার্যকর সমাধান চায়, যাতে এটি বারবার বিঘ্নিত না হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে এটি যাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখে, সেটাই করা হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিলে তা কখন থেকে কার্যকর হবে সে প্রশ্নও রেখেছেন প্রধান বিচারপতি। গতকাল বুধবার নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এ বিষয়ে কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারকের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ মামলার শুনানি হয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির ও ড. শরীফ ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে রাজনৈতিক দল ও ছয় ব্যক্তির করা চারটি আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এদিন নতুন করে আপিল শুনানির সিদ্ধান্ত দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাই কোর্ট বিভাগ সেই রিট খারিজ করে, তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বৈধই থাকে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল শুনে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেয়। তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও বাতিল হয়ে যায়। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ২০১১ সালের আপিল রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন। অন্য চারজন হলেনতোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। এছাড়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। পরবর্তীতে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন। সবগুলোর আবেদন একসঙ্গে শুনে সর্বোচ্চ আদালত বুধবার নতুন করে আপিল শুনানির জন্য ২১ অক্টোবর দিন ঠিক করে দিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডিবি প্রধান হলেন শফিকুল ইসলাম
পরবর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় ছাত্রকে ধর্ষণ, শিক্ষকের যাবজ্জীবন