সরকার পতনের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকামুখী লংমার্চ কর্মসূচির দিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে ৩৫ জনের লাশ; উত্তরার আরেক হাসপাতালে লাশ রয়েছে আরও ৯ জনের। গতকাল সোমবার অসহযোগের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।
প্রবল গণ আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এদিন ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি থানায় হামলাও হয়। ভাঙচুরের পাশাপাশি দেওয়া হয় আগুন। এর মধ্যে উত্তরা পূর্ব থানা ঘেরাও করে কয়েকশ মানুষ আগুন ধরিয়ে দেয়। নিচতলায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে সেখানে সংঘর্ষ বাঁধে। থানার ছাদ থেকে সাদা পোশাকের দুজনকে গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে দেখা যায়। খবর বিডিনিউজের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা রাত ৮টার দিকে সেখানে পুলিশকে উদ্ধারে সেনাবাহিনীর চারটি গাড়ি আসতে দেখেছেন। তবে তখনও গুলি চলছিল। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ অনেককে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে আনা হয়। পরে সেখানে ৯ জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) নাজমুল হাসান বলেন, তাদের হাসপাতালে নয়জনের মরদেহ এসেছে। মৃতের সংখ্যার আরও বাড়তে পারে। যারা মারা গেছে তাদের সবাই বুলেটের আঘাতে মারা গেছে। এ পর্যন্ত আমরা ৬ জনের মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছি। আরও তিনজনের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। এছাড়া আমাদের এখানে ৩০ জনের মতো চিকিৎসাধীন আছেন। এছাড়া উত্তরা আধুনিক হাসপাতালেও গুলিবিদ্ধ হয়ে অনেকে এসেছেন। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের এখানে গুলিবিদ্ধ একজনের মরদেহ আছে। এছাড়া ৪৩ জন এসেছেন যারা সবাই গুলিবিদ্ধ। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
অপরদিকে সব মিলিয়ে গতকাল দিন শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ৩৫ জনের লাশ থাকার তথ্য দিয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমমের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, হাসপাতালে তাদের মধ্যে অনেককে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। আবার তাদের কেউ কেউ আনার পর মারা গেছেন। এদিন সংঘাতে আহতদের মধ্যে হাসপাতালে এসেছেন ৫০০ জন। এদের মধ্যে ৭০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ।