ঢাকায় খেলতে গিয়ে ঢাকার বাইরের কোন দল সাফল্য নিয়ে ফিরতে পেরেছে তেমন নজির খুব একটা বেশি নেই। তবে সেদিক থেকে চট্টগ্রামের কল্লোল সংঘ যেন অনন্য নজির স্থাপন করল। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন আয়োজিত তৃতীয় বিভাগ ফুটবল লিগে খেলতে গিয়ে চমক সৃষ্টি করেছে কল্লোল সংঘ। ঢাকার অনেক সেরা দলকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় বিভাগে জায়গা করে নিল চট্টগ্রামের দলটি। গত সোমবার সুপার লিগে নিজেদের সপ্তম ম্যাচে হেরে গেরেও এক ম্যাচ বাকি থাকতে দ্বিতীয় বিভাগ নিশ্চিত হয়ে যায় কল্লোল সংঘের। গত ছয়মাসেরও বেশি সময় এই দলটি নিয়ে পরিশ্রম করে গেছেন ক্লাবের সাধারন সম্পাদক সালাউদ্দিন জাহেদ। শেষ পর্যন্ত সে কষ্টের ফল পেল তার দল। করোনার কারনে বার বার ব্যাহত হয়েছে লিগের ম্যাচ সমুহ। তারপরও ধৈর্য হারা হননি জাহেদ। শেষ পর্যন্ত সাফল্য নিয়েই চট্টগ্রামে ফিরছেন তিনি। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৮টি দল নিয়ে শুরু হয় ঢাকা তৃতীয় বিভাগ ফুটবল লিগ। দল সমূহ দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে গ্রুপ পর্বে খেলে। যেখানে কল্লোল সংঘ ছিল ‘এ’ গ্রুপে। গ্রুপ পর্বে নারিন্দা জুনিয়রের বিপক্ষে ড্র দিয়ে লিগ শুরু করলেও পরবর্তীতে দি মুসলিম ইনিস্টিউটকে ২-১ গোলে পরাজিত করে কল্লোল সংঘ। তৃতীয় ম্যাচে বিক্রমপুর কিংসের সাথে আবার ড্র করে। চতুর্ত ম্যাচে লালবাগ স্পোর্টিং ক্লাবের সাথে ড্র করে। পঞ্চম ম্যাচে উত্তরা ফ্রেন্ডসকে ১-০ গোলে পরাজিত করে। এরপর টানা তিন ম্যাচে যথাক্রমে টাংগাইল ফুটবল একাডেমি, ফকিরাপুল সূর্য তরুন এবং দীপালি যুব সংঘকে পরাজিত করে ৮ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে সুপার লিগে জায়গা করে নেয়।
সুপার লিগে কিং স্টারের বিপক্ষে ড্র দিয়ে শুরু হয় কল্লোল সংঘের। এরপর টানা আরো তিন ম্যাচে ড্র করে কল্লোল সংঘ। যেখানে দি মুসলিম ইনিস্টিউটের সাথে ১-১ গোলে, বিক্রমপুর কিংসের সাথে গোল শূন্য এবং জাবেদ আহসান সোহেল ক্রীড়া চক্রের সাথে গোল শূন্য ড্র করে। পরের দুই ম্যাচে নারিন্দা জুনিয়রকে ২-০ গোলে এবং দিপালী যুব সংঘকে ৩-২ গোলে পরাজিত করলেও সুপার লিগের সপ্তম ম্যাচে আলমগীর সমাজ কল্যান সংসদের কাছে ২-৩ গোলে হেরে যায় কল্লোল সংঘ। এরই মধ্যে সুপার লিগে ৭ ম্যাচ থেকে ১৩ পয়েন্ট লাভ করে দ্বিতীয় বিভাগে খেলা নিশ্চিত করে ফেলেছে কল্লোল সংঘ। এখনো আসাদুজ্জামান ফুটবল একাডেমির বিপক্ষে খেলা বাকি আছে। অবশ্য সে ম্যাচে হারলেও কোন ক্ষতি হবে না কল্লোল সংঘের। তাদের দ্বিতীয় বিভাগ নিশ্চিত হয়ে গেছে। যা চট্টগ্রামের কোন ক্লাবের জন্য রেকর্ড।
এদিকে ক্লাবের সাধারন সম্পাদক সালাউদ্দিন জাহেদ জানিয়েছেন দলের এই ফলাফলে তিনি দারুন খুশি। তিনি প্রথমে কৃতজ্ঞতা জানান দলের খেলোয়াড়দের প্রতি। যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে দলকে এ সাফল্য এনে দিয়েছে। এছাড়া দলের কোচ এবং ক্লাবের সকল কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। তিনি বলেন এই সম্মান শুধু কল্লোল সংঘের নয়। এই সম্মান পুরো চট্টগ্রামের। তিনি আরো সামনে এগিয়ে যেতে চান। দলের এই সাফল্যের দিনে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন কল্লোল সংঘের প্রধান উপদেষ্টা আ জ ম নাছির উদ্দীন, হাফিজুর রহমান, শাহাবুদ্দিন জাহাঙ্গীর, সিরাজউদ্দীন মো. আলমগীর, শাহ আলম বাবুল, মসিউর আলম স্বপন, শেখ নওশাদ সরোয়ার পিল্টু, ক্লাবের সহ সভাপতি নাছির মিয়া, মোশেদ আলী, সাইফুল্লাহ মনসুর, হারুন অর রশীদ, ইমতিয়াজ বাবলা, এম এ নেওয়াজ, শাহীন, নাহিদ মুরাদ মুন্না, রাজীব, তানভীর, রাসেল মুরাদ, মোশাররফ হোসেন লিটন, ইমরান, আমির হোসেন, বিপ্লব বড়ুয়া শৈবাল বড়ুয়া সকলের প্রতি। বিশেষ করে কোচ মো. কাশেম এবং নাসির মিয়ার প্রতি তাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টার জন্য।