আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল রোববার ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে দেখা করে আবারও রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় নির্বাচনের তারিখ, সুস্পষ্ট দিনক্ষণ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। বিএনপির দাবি আগামী ডিসেম্বরের ভেতরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জনপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিএনপিসহ যারা একসঙ্গে রাজপথে আন্দোলন করেছি, আমরা আমাদের সর্বাত্মক সমর্থন অব্যাহত রেখেছি। খবর বাংলানিউজের।
তিনি বলেন, দেশে–বিদেশে সম্মানিত দক্ষ এবং যোগ্য ব্যক্তিত্ব অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের নেতৃত্বে অবিলম্বে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, নিরপেক্ষ একটি জাতীয় নির্বাচন দেখতে পাবে। আজ এনপিপির এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পতিত পলাতক স্বৈরাচারের আমলে রাষ্ট্র, রাজনীতি ও গণতান্ত্রিক দলগুলোকে নানা ধরনের দমন–পীড়ন এবং ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হয়েছে। এনপিপিও সেই তালিকা থেকে বাদ যায়নি। আপনারা আজ ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছেন। পতিত স্বৈরাচার আর কোনোভাবেই যেন ফিরতে না পারে, সেটাই হোক প্রতিটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের পথ রুদ্ধ করে রাষ্ট্র, সরকার এবং রাজনৈতিক গুণগত পরিবর্তনের জন্য দরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার। সময়ের প্রয়োজনে সাংবিধানিক অথবা আইনগত সংস্কার এবং প্রায়োগিক সংস্কার অর্থাৎ উভয় প্রকারের সংস্কারের বিকল্প নেই। অল্প কিংবা বেশি সংস্কার বলেও কিন্তু কিছু নেই। রাষ্ট্র এবং রাজনীতির জন্য সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমার কাছে মনে হয় পুঁথিগত সংস্কারের চেয়ে প্রায়োগিক সংস্কার বেশি প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, ফ্যাসিবাদ রুখে দিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন। জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে সংসদ, সরকার গঠিত হলে অবশ্যই সেই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। এর মাধ্যমেই রাষ্ট্রের নাগরিকদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হয়। জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত থাকলে সরকারের পক্ষে ফ্যাসিবাদী চরিত্র ধারণ করা সহজ হয় না।
তারেক রহমান বলেন, সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সরকার, অন্তর্বর্তী সরকার কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চরিত্র যাই হোক সরকারকে জবাবদিহিতে বাধ্য করা না গেলে ক্ষমতাসীন সরকার হয়তো নিজেদের অজান্তেই স্বৈরাচারী হয়ে ওঠে। এই কারণেই হুমকি–ধমকি উপেক্ষা করে অবশ্যই নাগরিকদের সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা জারি রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রতিটি নাগরিককে অধিকারের দাবিতে সোচ্চার থাকতে হবে। দেশের জনগণ কিন্তু সরকারের করুণার পাত্র নয়। সরকার অবশ্যই জনগণের কথা শুনতে, জনগণের ন্যায্য দাবি মানতে বাধ্য। এখানে সরকারের মান–অভিমান বা রাগ–বিরাগের কোনো সুযোগ নেই।