কথা রেখেছেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমনি; বলেছিলেন, ‘লাইভে’ এসেই স্বামী রাজের সব কথার উত্তর দেবেন। ‘লাইভে’ এসে পরীমনি বলেছেন, তার পক্ষে রাজের সঙ্গে আর সংসার করা সম্ভব নয়। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার ডিভোর্স চাই।
একটি গণমাধ্যমের লাইভ শো ‘উত্তপ্ত’ হয়ে উঠেছে রাজ ও পরীমনির পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে। গত সোমবার রাতে ওই অনুষ্ঠানেই পরীমনি তার দাম্পত্য ‘সংকট’ এবং রাজের বিভিন্ন কথার ব্যাখ্যা, উত্তর দেন। সঙ্গে জানিয়ে দেন, রাজের সঙ্গে তার বিবাহিত জীবনের সমাপ্তি টানতে ‘বিচ্ছেদ’ প্রত্যাশার কথাও। আগের দিন একই অনুষ্ঠানে এসে পরীমনির প্রতি ‘ভালোবাসার’ কথা জানান রাজ, তবে আপাতত তিনি ‘অফিসিয়াল ডিভোর্সের’ পথে না হাঁটলেও সংসারে আর ফিরবেন না বলেও জানান। খবর বিডিনিউজের।
গত সোমবার ওই অনুষ্ঠানে কথা বলতে বলতে মাঝেমধ্যে ক্ষুব্ধও হয়ে ওঠেন নায়িকা, কখনও আবার কেঁদেও ফেলেন। এছাড়াও রাজ এবং তিন অভিনেত্রী সুনেরাহ, তানজিন তিশা এবং অভিনেত্রী নাফিজা তুষির সঙ্গে রাজের দাবি করা ‘বন্ধুত্বের’ সম্পর্কের ধরন তিনি ফাঁস করে দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। পরিস্থিতি ‘বাধ্য’ করলে আরও বহু কিছু ‘পাবলিক’ করবেন বলেও জানান পরীমনি। রাজকে আপাদমস্তক ‘ফেইক’ মানুষ মন্তব্য করে পরীমনি বলেন, যে মানুষ আমাকে পাবলিকলি অসম্মান করে, তেমন একটা ফেইক মানুষের সঙ্গে থাকতে পারব না। আমি চাই রাজ আমাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডিভোর্স দিয়ে দিক।
তিনি বলেন, আমি সত্যি চাই না রাজের স্ত্রী পরিচয় নিয়ে থাকতে। এর চেয়ে আমার জন্য রাজ্যের মা হয়ে থাকা অনেক কমফোর্টেবল, অনেক আরাম, শান্তি ও সম্মানের। যেটার মধ্যে কোনো ফেইকনেস ও মিথ্যা নেই। আমি মা, রাজ্য আমার ছেলে। রাজকে ‘অতিথি পাখি’ উল্লেখ করে পরীমনি বলেন, বাচ্চার দায়িত্ব একজনের উপরে চাপিয়ে দিয়ে ঘুরে বেড়াবে রাজ, সেটা হয়না। রাজকে উদ্দেশ্য করে নায়িকা বলেন, তাদের সমস্যার মধ্যে কোনোভাবেই বাচ্চাকে টেনে এসে ‘ইমোশোনাল’ পরিস্থিতি তৈরি করা যাবে না।
কোনোভাবে একসঙ্গে বসে সমস্যার সমাধান করা যায় কিনা এ প্রশ্নে পরীমনি বলেন, বসার হলে আগেই হত। আর আমি তার সঙ্গে বসতে চাই না। কারণ বসে কোনো লাভ নেই। কেন সংসার ছেড়েছেন সেই কারণটি সবাইকে জানিয়ে দিতে পরীমনিকে অনুরোধ করেছিলেন রাজ। তিনি বলেছিলেন, পরীমনি জানে কেন আমি সংসার ছেড়েছি। পরীমনি যাকে ওস্তাদ মানে এবং আমার বড় ভাই সেই নির্মাতা গিয়াসউদ্দিন সেলিম এবং তার স্ত্রীও জানেন, কেন আমি বাসা ছেড়েছি। তো পরী বলুক কেন রাজ বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পরীমনি যাকে ‘ওস্তাদ’ বলে ডাকেন সেই নির্মাতা গিয়াসউদ্দিন সেলিমকে দোষারোপ করেন। যার ‘গুণীন’ সিনেমার সেট থেকে রাজ–পরীমনির প্রণয় ও বিয়ে সেই নির্মাতা রাজের সংসার ছেড়ে চলে যাওয়ার সব পরিকল্পনা ‘জানতেন’ বলে দাবি করেন পরীমনি।
পরীমনি ও রাজের এবারের সমস্যার শুরু গত ৩০ মে। ওইদিন রাজের ফেসবুক আইডি থেকে কয়েকটি ভিডিও এবং ছবি প্রকাশ হয়। সেগুলো কিছুক্ষণ পর মুছে দেওয়া হলেও ততক্ষণে ছড়িয়ে পড়ে নানা মাধ্যমে। ওই ভিডিও এবং ছবিতে সুনেরাহ, তিশা এবং অভিনেত্রী নাফিজা তুষিকে দেখা গিয়েছিল। তাদের ‘অসংলগ্ন’ কথা সোশাল মিডিয়ায় তুমুল আলোচনার খোরাক জোগায়।
এর আগেও ভাঙনের সুর শোনা গেছে পরীমনির কাছ থেকে। ২০২২ সালের শেষ দিনে সংসার ভাঙার ইঙ্গিত দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন ঢাকার চলচ্চিত্রের এ নায়িকা। এছাড়া এর আগেও অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিমের সঙ্গে রাজকে জড়িয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন পরীমনি। এবারে রাজ এবং পরিমনি দুজনেই দুজনের কাছ থেকে আলাদা থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।