একজন ছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বড় কর্তা, আরেকজন দুর্নীতি দমনের যোদ্ধা। ৪০ লাখ টাকার ঘুষের লেনদেনে জড়িয়ে এখন তাদের দুজনকেই জেল খাটতে হবে। এর মধ্যে পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক মিজানুর রহমানকে দণ্ডবিধির ১৬৫ এ ধারায় ৩ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আর দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় ৩ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি মুদ্রা পাচার আইনে ৫ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ৮০ লাখ জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে। তবে দুই ধারার সাজা একসঙ্গে খাটতে হবে বলে বাছিরকে সব মিলিয়ে ৫ বছর জেল খাটতে হবে। দুজনের ক্ষেত্রেই হাজতবাসের সময় বাদ যাবে। খবর বিডিনিউজের।
ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম গতকাল বুধবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। এর আগে মিজানকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এবং বাছিরকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আদালতে হাজির করা হয়। বেলা ১১টার পর তাদের তোলা হয় কাঠগড়ায়।
ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে এ মামলায় দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইন, অর্থপাচার এবং দণ্ডবিধির আওতায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিল দুদক। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ৩ ফেব্রুয়ারি মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে।
বাছিরের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান। আর মিজানুরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী।
এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠায় ২০১৯ সালে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মিজানকে। এর চার মাস পর তার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক; এক হাত ঘুরে সেই অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান কমিশনের তৎকালীন পরিচালক এনামুল বাছির। সেই অনুসন্ধান চলার মধ্যেই ডিআইজি মিজান দাবি করেন, তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন দুদক কর্মকর্তা বাছির। এরপর ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থার পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলা করেন। পরে তিনি অভিযোগপত্র দেন। ‘অবৈধভাবে সুযোগ প্রদানের হীন উদ্দেশ্যে’ এনামুল বাছির ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়ার কথা জানানো হয় অভিযোপত্রে।












