ইউরোর শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের গত আসরে ফাইনাল থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল ইংল্যান্ডকে। তবে সে খালি হাত পুরনের আরো একটি সুযোগ পেল ইংলিশরা। শুধু তাই নয় ইংল্যান্ড বড় কোন টুর্নামেন্টে তৃতীয়বার ফাইনালে উঠল। প্রথশবার ১৯৬৬ সালেল বিশ্ব্কাপে। সেবার তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। দ্বিতীয়বার ইউরোর গত আসরে । নিজেদের মাঠে সে ম্যাচে ইতালির কাছে হেরে বিদায় নিগে হয়েছিল ইংলিশদের। আর এবার প্রথমবারের মত দেশের বাইরে কোন বড় টুর্নামেন্টে ফাইনালে গেল ইংলিশরা। দুর্দান্ত এক সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে ২–১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় ফাইনালে জায়গা করে নিল হ্যারি কেইনের দল। জার্মানীল ডর্টমুন্ডে শাভি সিমন্সের গোলে পিছিয়ে পড়ার পর সমতা ফেরান হ্যারি কেইন। আর শেষ দিকে ইংলিশদের উচ্ছ্বাসে ভাসান ওয়াটকিন্স। শিরোপা লড়াইয়ে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ স্পেন। বার্লিনে আগামী রোববার রাতে হবে ফাইনাল।
ম্যাচের শুরুটা দুর্দান্ত হয় ডাচদের। ডেকলান রাইসের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে, কিছুটা এগিয়ে বক্সের বাইরে থেকে শট নেন সিমন্স। বুলেট গতির ওই শট ঠেকানোর কোনো সুযোগই পাননি ইংলিশ গোলরক্ষক। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ২১ বছর বয়সী সিমন্সের এটা দ্বিতীয় গোল। পাঁচ মিনিট পর দূরপাল্লার শটে চেষ্টা করেন কেইন। ঝাঁপিয়ে সেটা ঠেকিয়ে দেন বার্ট ভেরব্রুখেন। দুই মিনিটের মাথায় বক্সে বল পেয়ে উড়িয়ে মারেন তিনি। তবে তার কারণেই সমতায় ফেরার পথ খুলে যায় ইংল্যান্ডের। ডাচ ডিবক্সে কেইন শট নিতে যাচ্ছে দেখে পা বাড়িয়ে দেন ডেনজেল ডামফ্রিস। শট নেওয়ার পরমুহূর্তে তার পায়ে লেগে প্রচন্ড ব্যথা পান ইংলিশ অধিনায়ক। ভিএআর মনিটরে দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ডাচ ডিফেন্ডারকে দেখান হলুদ কার্ডও। সে পেনাল্টি থেকে গোল করে খেলায় সমতা ফেরান কেইন। ২৩ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো ইংলিশরা। বক্সে প্রতিপক্ষের বাধা এড়িয়ে গোলমুখে এগিয়ে গোলরক্ষকের পায়ের ফাঁক দিয়ে শট নিয়েছিলেন ফিল ফোডেন। একবারে গোললাইন থেকে সেটা আটকান ডামফ্রিস।বিরতির পর খেলার গতি কমে আসে অনেকটাই। প্রথমার্ধে গোলের জন্য মাত্র তিন শটের একটি লক্ষ্যে রাখতে পারা নেদারল্যান্ডস ৬৪ মিনিটে একটি সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ভার্জিল ফন ডাইকের শট কর্নারের বিনিয়ে রক্ষা করেন ইংলিশ গোল রক্ষক দ্বিতীয়বার জর্ডান পিকফোর্ড। ৭৯ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে জালে বল পাঠিয়েছিলেন বুকায়ো সাকা। কিন্তু অফসাইডের কারণে বাতিল হয় সেই গোল। খেলা যখন ধীরে ধীরে অতিরিক্ত সময়ের দিকে গড়াচ্চিল তখনই গোল খেয়ে বসে নেদারল্যান্ডস। খেলার নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে ডান দিক থেকে পালমারের পাস বক্সে ধরে, শরীর ঘুরিয়ে সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে কোনাকুনি শট নেন ওয়াটকিন্স। গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে বল খুঁজে নেয় ঠিকানা। আর সে সাথেই টানা দ্বিতীয়বার ইউরোর ফাইনালে যাওয়ার উল্লাসে মাতে ইংল্যান্ড। মাত্র ১০ মিনিটের জন্য মাঠে নেমেছিলেন ওয়াটকিন্স। আর সে সময়ে দলকে নিয়ে গেলেন ফাইনালে। আর সে সুবাধে ম্যাচ সেরা হয়ে যান ওয়াটকিন্স। দুই মিনিট যোগ করা সময় শেষে রেফারী লম্বা বাঁশি বাজতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে সাউথগেটের দল। প্রথমবারের মতো বিদেশের মাটিতে কোনো মেজর টুর্নামেন্টের (বিশ্বকাপ ও ইউরো) ফাইনালে উঠল ইংল্যান্ড।