দানকর নিয়ে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের আপিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ফলে দানের বিপরীতে প্রায় ১৫ কোটি টাকা কর চেয়ে ইউনূসকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পাঠানো নোটিস বৈধ ছিল বলে যে সিদ্ধান্ত হাই কোর্ট দিয়েছিল, তাই বহাল থাকল।
হাই কোর্টে মামলা করার সময় নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত করের ১০ শতাংশ হারে ৩ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৪৪৮ টাকা জমা দিতে হয়েছিল ইউনূসকে। আপিলের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় এখন তাকে বাকি ১২ কোটি টাকাও পরিশোধ করতে হবে। খবর বিডিনিউজের।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ রোববার শুনানি শেষে ইউনূসের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেয়। ইউনূসের পক্ষে আপিল বিভাগে শুনানি করেন আইনজীবী সরদার জিন্নাত আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। ২০১১–১২ অর্থবছরে মুহম্মদ ইউনূস ট্রাস্ট, ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্ট ও ইউনূস সেন্টারে ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দান করেন নোবেলজয়ী ইউনূস। ওই দানের বিপরীতে ১৯৯০ সালের দানকর আইন অনুযায়ী প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা কর দাবি করে ইউনূসকে নোটিস পাঠায় এনবিআর।
শ্রম আদালতের মামলায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ : শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলায় অভিযোগ গঠন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।
গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ইউনূসের আবেদনে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাশের বেঞ্চ গতকাল রোববার এ রুল জারি করে। আদালতে ইউনূসের পক্ষে ছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন; রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ড. ইউনূস সহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তা বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত। দুই মাসের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।’ ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ইউনূস সহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪–এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
গত ৬ জুন মুহাম্মদ ইউনূস সহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা। অভিযুক্ত অন্য তিনজন হলেন গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
এই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এর আগে হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন ইউনূস। সেই আবেদনে ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিল আদালত। একইসঙ্গে মামলা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আপিল বিভাগ ২০২২ সালের ১৩ জুন দুই মাসের মধ্যে রুল নিষ্পত্তি করতে হাই কোর্টকে নির্দেশ দেয়।