ঠাঁই নেই অবস্থা, শয্যা ৩২ থেকে ৫০ হচ্ছে

বিআইটিআইডি হাসপাতাল

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৮ জুন, ২০২১ at ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ

ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালের ৩২টি শয্যায় ঠাঁই নেই অবস্থা। গত কয়েক দিন ধরে শয্যা খালি থাকছে না করোনা ডেডিকেটেড এ হাসপাতালে। রোগীর চাপ সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শয্যা সংখ্যা ৩২ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিআইটিআইডি হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. বখতিয়ার আলম। তিনি আজাদীকে বলেন, ক’দিন ধরে হঠাৎ রোগীর চাপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। আমাদের সবক’টি শয্যাতেই রোগী ভর্তি। নতুন রোগী এলে আর রাখার জায়গা নেই এমন অবস্থা। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে শয্যা সংখ্যা ৩২ থেকে ৫০-এ উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কয়েক দিনের মধ্যেই এসব শয্যায় রোগী ভর্তি শুরু হবে। বিআইটিআইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০ জুনের পর থেকে ৩২ শয্যার সবক’টিতেই রোগী ভর্তি এ হাসপাতালে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ৩১ জন রোগী ভর্তি ছিলেন বলে জানান হাসপাতালের করোনা টিমের ফোকাল পারসন ডা. মামুনুর রশীদ। সপ্তাহখানেক আগেও বেশ কিছু শয্যা খালি থাকত জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু গত কয়দিন ধরে হঠাৎ রোগীর চাপ প্রচুর বেড়ে গেছে।
গত বছরের মার্চে সংক্রমণ শুরুর দিকে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় চট্টগ্রামে সরকারি দুটি হাসপাতাল নির্ধারণ করে করোনা মোকাবেলায় গঠিত জেলা পর্যায়ের কমিটি। এর একটি ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি হাসপাতাল। অপরটি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালেও আলাদা ইউনিটে করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা শুরু হয়।
করোনা রোগীদের চিকিৎসায় প্রস্তুতি হিসেবে বিআইটিআইডি হাসপাতালের ৩২টি এবং জেনারেল হাসপাতালের ১০০টি আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুত করা হয়। জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশন শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ১৪০ করা হয়েছে। রোগী ভর্তির মাধ্যমে শুরুতে এই দুটি হাসপাতালেই করোনার চিকিৎসা কার্যক্রম চালু হয় চট্টগ্রামে। যদিও এ দুটির একটি হাসপাতালেও আইসিইউ-ভেন্টিলেটর ও সেন্ট্রাল অঙিজেন সিস্টেম ছিল না। ছিল না অঙিজেন প্লান্টও। পরে গত বছরের ২৩ এপ্রিল ভেন্টিলেটরসহ দশটি আইসিইউ শয্যায় সেবা চালু হয় জেনারেল হাসপাতালে। পরবর্তীতে অঙিজেন প্লান্টের পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছে সেন্ট্রাল অঙিজেন সিস্টেমও। সর্বশেষ চলতি বছরের ৮ এপ্রিল আরো ৮টি আইসিইউ শয্যা উদ্বোধন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন ১৮টি আইসিইউ শয্যা চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। সরকারি অর্থায়নে বসেছে অঙিজেন প্লান্ট। সেন্ট্রাল অঙিজেন সিস্টেম স্থাপন করে দিয়েছে শিল্প গ্রুপ এস আলম পরিবার। এসব সুবিধা বিবেচনায় করোনা চিকিৎসায় জেনারেল হাসপাতাল এখন অনেকটা স্বয়ংসম্পূর্ণ।
তবে একই সাথে করোনা চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হলেও চিকিৎসা সুবিধায় তুলনামূলক অনেকটা পিছিয়ে ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি হাসপাতাল। শুরু থেকেই ৩২ শয্যায় করোনা রোগীর চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে এ হাসপাতালে। শ্বাসকষ্টের রোগীকে অঙিজেন সাপোর্ট দিতে অঙিজেন সিলিন্ডারই ভরসা। নেই আইসিইউ-ভেন্টিলেটর সুবিধা। এবার বিআইটিআইডি হাসপাতালেও যুক্ত হচ্ছে এসব চিকিৎসা সুবিধা। ভেন্টিলেটরসহ ৫ বেডের আইসিইউ শয্যা বসছে এ হাসপাতালে। কিছুদিনের মধ্যেই আইসিইউ সেবা চালু হবে বলে জানিয়েছেন ডা. মামুনুর রশিদ। আইসিইউ সেবা চালু হলে হাসপাতালে করোনা চিকিৎসায় সুবিধা অনেকটা বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসড়কে ঝরল ৫ প্রাণ
পরবর্তী নিবন্ধওসি প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন