ট্রাম্পের নীতি অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের সমস্যায় ফেলতে পারে

| বৃহস্পতিবার , ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৬:৩৯ পূর্বাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র দৃশ্যত অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু করেছে। কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপের প্রভাব সেখানে অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের ওপরও পড়তে পারে। বৈদেশিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অভিযান শুরু হয়েছে বলে আমরা খবর পাচ্ছি। সুতরাং বাংলাদেশিরা রেহাই পাবেএমনটা আমাদের আশা করা ঠিক হবে না। খবর বাসসের।

বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজেস ইনস্টিটিউটের (বিইআই) প্রধান কবির বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব বাতিলের পরিকল্পনা করেছে যার ফলে অনেক লোককে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, এমন অনেক শিশু আছে যাদের বাবামা সফরকালে বা অবৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালে সেখানে জন্মগ্রহণ করেছিল, অর্থাৎ সে সকল শিশু জন্মসূত্রে সেখানকার নাগরিকত্ব লাভ করেছে। কিন্তু প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় তারা এখন অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে যাচ্ছে। তবে নীতিটি আইনি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে। আমার ধারণা, যারা যথাযথ কাগজপত্র ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী লোকদের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারগুলোকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে বলবে।

সাবেক কূটনীতিক আরো বলেন, তার জানা মতে ১৬০টি দেশের বহু লোক যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাস করছেন এবং গণমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী ভারত এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তাদের ১৮ হাজার নাগরিককে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে।

আরেকজন বৈদেশিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান বলেছেন, ট্রাম্প মূলত দক্ষিণ আমেরিকান অভিবাসীদের লক্ষ্য করে একটি কঠোর অভিবাসন নীতি তৈরি করেছেন। কিন্তু যেহেতু নীতিটিতে নির্দিষ্ট কোন দেশের কথা বলা হয়নি, তাই এটির প্রভাব বাংলাদেশীসহ অন্যান্য দেশের অভিবাসীদের ওপড়ও পড়বে।

অনানুষ্ঠানিক বা অসমর্থিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ১০ লাখের বেশি বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন এবং তাদের এক দশমাংশ অনথিভুক্ত। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ইউএস আইসিটি বিশেষজ্ঞ আফজাল হোসেন বলেছেন, ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সুপার পাওয়ার দেশটি অবদান রাখতে সক্ষম সাড়া বিশ্বের শীর্ষ মেধা ও প্রতিভাকে বরাবরই স্বাগত জানিয়ে আসছে। তার মতে, ট্রাম্পও সেই নীতি থেকে বিচ্যুত হবেন না। তবে অপ্রয়োজনীয় বিবেচনায় নতুন প্রশাসন অন্যদের তাড়ানোর প্রচেষ্টা চালাবে।

রাষ্ট্রদূত কবির এ প্রসঙ্গে হোসেনের সঙ্গে একই অভিমত প্রকাশ করেন যে, ট্রাম্প ইতিমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করা যুবকদের স্বীকৃতি দেবেন।

সিএনএন জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের কারণে বাংলাদেশিসহ হাজার হাজার মানুষ ভীত হয়ে পড়েছে। মার্কিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তাদের অনেককে ফেরৎ পাঠানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে দৃশ্যত আটক করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিগারেটের আগুনে পুড়ল নির্মাণসামগ্রী
পরবর্তী নিবন্ধঅপরাধের দায় স্বীকার না করে রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না আওয়ামী লীগ : প্রেস সচিব