ছয়দিন পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট। রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প বা ডেমোক্র্যাটিক জো বাইডেন যিনিই ক্ষমতায় আসুন, শুরুতেই তাকে মোকাবেলা করতে হবে করোনাভাইরাস সংকটে দুর্দশাগ্রস্ত নিম্ন ও মধ্য আয়ের আমেরিকানদের এবং তাদের সামাল দেওয়ার বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ।
কোভিড-১৯ মহামারীতে বিশ্ব অর্থনীতি আজ চরম বিপর্যস্ত। এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু দেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই দেশটিকে গত ১০০ বছরেও এত মারাত্মক স্বাস্থ্য সংকটে পড়তে হয়নি। করোনাভাইরাস মারাত্মক সংক্রামক হওয়ায় এ রোগের বিস্তার রোধে লকডাউন জারি করতে হয়েছে। ফলে থমকে গেছে অর্থনীতির চাকা। খবর বিডিনিউজের।
অর্থনীতি বাঁচাতে অনেকক্ষেত্রে লকডাউন তুলে নেওয়া হলেও ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য সুরক্ষার নানা বিধি আরোপ করা আছে। ফলে অর্থনৈতিক অনেক কর্মকাণ্ড এখনও বন্ধ বা আংশিক বন্ধ থাকায় যুক্তরাষ্ট্রে বহু মানুষ কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় দুই কোটি ২০ লাখ মানুষ বেকার হয়েছেন। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ সবচেয়ে বেশি কাজ হারিয়েছেন। তাদের অর্ধেক এখনও কাজে ফিরতে পারেননি। নতুন করে কিছু কিছু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হলেও কর্মী নিয়োগের গতি খুবই ধীর। মরার ওপর খাড়ার ঘা এর মতো নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রে আবার ভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বিধিনিষেধ কঠোর হচ্ছে। ফলে বিভিন্ন হোটেল, পরিবহন কোম্পানি ও রেস্তোরাঁ মালিকরা আগামী দিনে আরো কর্মী ছাঁটাই করতে হতে পারে বলে সতর্ক করেছে।
মহামারীর প্রাদুর্ভাবের পর থেকেই ক্রেতার অভাবে এইসব খাতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার যোগাড় হয়েছে। কর্মীদের বেতন দিতে অনেক প্রতিষ্ঠানকে সরকার থেকে দীর্ঘদিন ধরে অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন আমলের কর্মকর্তা ও ‘দ্য ভ্যানিশিং আমেরিকান ড্রিম’ বইয়ের লেখক জিন লুডভিগ বলেন, আমেরিকার জন্য আগামী ১০ বছর বা ২০ বছরে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, বাড়তে থাকা সুবিশাল নিম্নবিত্ত জনগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করা।
করোনাভাইরাস সহায়তা খাতে ট্রাম্প প্রশাসন দুই লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার তহবিল চায়। এ নিয়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি নিয়ন্ত্রিত যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের আলোচনা চলছে। প্রতিনিধি পরিষদ আসন্ন নির্বাচনের আগে ট্রাম্প প্রশাসনকে আর কোনও অর্থ দিতে চায় না। উচ্চকক্ষ সিনেটের অনেক রিপাবলিকানও এত ব্যয় নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য এত সহায়তার প্রয়োজন আছে কিনা তা নিয়েও তারা প্রশ্ন তুলেছে। তাই বলাই যায়, ২০২১ সালের আগে এ বিষয়ের কোনো সুরহা হচ্ছে না।