উদ্বোধনের পর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে টোল দিয়ে উঠেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন। পরে টোল দিয়ে উড়ালসড়কটিতে ওঠে তাঁর গাড়িবহর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ হাতে টোল প্লাজায় অর্থ পরিশোধ করেন। কাওলা প্রান্তের টোল প্লাজা সূত্রে জানা গেছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার আগে গাড়িপ্রতি ৮০ টাকা হারে টোল দিয়ে ফলক উন্মোচন মঞ্চে উঠেন সরকার প্রধান। বোতাম চেপে উদ্বোধনের পর মোনাজাতে অংশ নেন শেখ হাসিনা। এ সময় বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেতু সচিব মো. মনজুর হোসেন ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতার উপস্থিত ছিলেন। খবর বাংলানিউজের।
সরকারের এ মেগা প্রকল্প উদ্বোধনের পর ছোট বোন শেখ রেহানাসহ গাড়িবহর নিয়ে উড়ালসড়কটিতে চড়ে সমাবেশের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে কাওলা প্রান্তে তাঁকে এক্সপ্রেসওয়ের বৃত্তান্ত ব্রিফ করে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।
২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রথম চুক্তি সইয়ের এক যুগ পরে নানা চড়াই–উৎরাই পেরিয়ে আলোর মুখ দেখল এ প্রকল্প। গতকাল এটি উদ্বোধন হলেও চালু হবে আজ। আজ রোববার ভোর ৬টা থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
চার ক্যাটাগরিতে টোল আদায় হবে এ উড়ালসড়ক থেকে। বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ১১.৫ কিলোমিটার। এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা থাকবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। সড়কটিতে পাড়ি দিতে সাধারণ যাত্রীদের আগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় নষ্ট হতো। এখন থেকে সেটি আর হবে না। উত্তরার কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১৫টি সংযোগ সড়ক থাকলেও দুটির কাজ শেষ না হওয়ায় তেরটি সংযোগ সড়ক দিয়ে যান চলাচল করবে। থ্রি হুইলার, সাইকেল ও পথচারীদের এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল করতে দেওয়া হবে না। মোটরবাইক এখনই চলতে পারবে না।
২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি চুক্তি সই হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। পরে প্রকল্পের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্পটি থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড ৫১ শতাংশ ও চীনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান শোনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনোমিক গ্র্যান্ড টেকনিক্যাল কো–অপারেশন গ্রুপ ৩৪ শতাংশ ও সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেড ১৫ শতাংশ যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে। প্রকল্পের মূল দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৬ কিলোমিটার। র্যাম্পসহ মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ৮,৯৪০ কোটি টাকা, যার ২৭ শতাংশ বাংলাদেশ সরকার ভিজিএফ হিসেবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করবে। তবে ভূমি অধিগ্রহণ, নকশা বদল, অর্থ সংস্থানের জটিলতায় চারবার সময় বৃদ্ধির ফলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকায়।












